শিক্ষাক্রম থেকে ধর্মীয় শিক্ষা তুলে দেওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার তথ্য উড়িয়ে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ধর্মীয় শিক্ষা তুলে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত ঘোষণা নিয়ে বুধবার (০৬ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
দীপু মনি বলেন, আমি তখন দেশে ছিলাম না, একজন সংসদ সদস্য আমাদের পাঠ্যপুস্তকের বিষয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। পরে আবার তিনিই স্পিকারকে চিঠি দিয়ে বলেছেন তার তথ্য সঠিক ছিল না এবং তার এ বক্তব্য এখনকার বইয়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। তিনি এগুলো প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা যে যেখানেই থাকি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার সময় সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে কথা বলা সবচেয়ে ভালো। আর একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে আমাদের চাওয়াটাও অনেক বেশি। আমি তাকে অন্তত এটুকু সাধুবাদ দিতে চাই যে তিনি পরে হলেও তথ্য যাচাই করে ভুল স্বীকার করে প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন।
দীপু মনি বলেন, তার এ বক্তব্যের ভিডিও-র একটি অংশ যারা বিভিন্ন সময়েই ধর্মের দোহাই দিয়ে নানান ভাবে আমাদের এগিয়ে যাওয়াকে বন্ধ করার চেষ্টা করে, তারা সেটি ব্যাপক ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। কাজেই তিনি যা বলেছেন সেটি কেবল সেখানেই শেষ না যেখানে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এটার ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই বক্তব্যের কিছুদিন আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রচারণা চলছিল যেটা আমার নজরে এসেছে, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা মিথ্যা, ধর্ম শিক্ষা সব সময় ছিল, এখনও আছে। না থাকার কোনো কারণ নেই।
দীপু মনি বলেন, আমরা বারবার বলছি শিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞান, দক্ষতা যেমন থাকবে পাশাপাশি সঠিক মূল্যবোধ, নৈতিকতায় ধর্ম শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাজেই ধর্ম শিক্ষা বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বাদ দেইও নেই। নতুন কারিকুলামে আমরা যেমন সবকিছু করে শেখার দিকে যাচ্ছি সেখানে ধর্ম শিক্ষার বইগুলোও শুধু পড়ে গেলাম তা যেন না হয়। তারা যেন ধর্ম শিক্ষার বোধগুলো, নৈতিকতা যেন অনুধাবন করতে পারে। তাদের জীবনে চর্চা করতে পারে সেভাবে বইগুলো তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কাজেই যারা আজকে ধর্ম শিক্ষা তুলে দেওয়া হয়েছে বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য ধর্ম রক্ষা নয়, পক্ষে থাকা নয় উদ্দেশ্য ধর্মকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতীশীল করা। দেশের ধর্মভীরু মানুষকে উস্কে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের একটা পরিবেশ তৈরি করা এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশকে অস্থীতিশীল করে তোলা। আমার মনে হয় এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের দায়িত্বে থাকা মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী।