এশিয়ার হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশ উন্নত দেশের শ্রেণীভুক্ত, তার মধ্যে সবার ওপরে আছে জাপান। তবে দীর্ঘ তিন দশক ধরে দেশটিতে জন্মহার কেবলই হ্রাস পাচ্ছে। এর মধ্যে গত বছর রেকর্ড পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে জন্মহার। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জাপানে জন্মগ্রহণ করেছে ৮ লাখেরও কম সংখ্যক শিশু। বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির এত নিম্নহার আগে কখনও দেখেনি জাপান।
তাই জাপানে জন্মহার বাড়াতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। সোমবার এক পার্লামেন্ট অধিবেশনে জাপানের এই দীর্ঘমেয়াদী সংকট সমাধানে সরকারের অবস্থান কেমন হওয়া উচিত, তা তুলে ধরেন তিনি।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে নিম্ন জন্মহারের জেরে অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে, এখন দেশের সামাজিক কাঠামো ও কার্যক্রম ঠিক রাখাই সবচেয় বড় চ্যালেঞ্জ। যদি এভাবে চলতে থাকে, সেক্ষেত্রে সামনে সব দিকে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে।’
‘তাই জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য যা করার দরকার— তা এখনই শুরু করতে হবে আমাদের; আর দেরি নয়। এখন এই ইস্যুতে নিষ্ক্রিয় থাকার অর্থ হলো সমূহ ধ্বংসকে আমন্ত্রণ জানানো।’
জাপানের সরকার অবশ্য দম্পতিদের জন্য সন্তান জন্ম ও লালন বাবদ আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। বর্তমানে প্রণোদনায় যে অর্থ দেওয়া হয়, সন্তান জন্মের পর হাসপাতালের বিল মেটাতেই তা শেষ হয়ে যায়। ফলে সীমিত আয়ের দম্পতিরা স্বাভাকিভাবেই এই প্রণোদনার ওপর নির্ভর করে সন্তান জন্মদানের ঝুঁকি নিতে চান না।
উন্নত জীবনযাত্রা হওয়ায় জাপানে সন্তান জন্মদান ও লালন পালনের ব্যয় খুবই উচ্চ। বিশ্বের যেসব দেশে সন্তান জন্ম ও তাকে বড় করে তোলার ব্যয় সবচেয়ে বেশি, সেসবের মধ্যে প্রথম সারিতে আছে জাপান। দেশটিতে প্রতি বছর জন্মহার কমতে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ এটি।
সোমবারের অধিবেশনে কিশিদা বলেন, তার সরকার আগামী এপ্রিল মাসে প্রণোদনার অর্থ বৃদ্ধি করবে এবং জুন মাসে আগামী অর্থবছরের বাজেটে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করা হবে অর্থ। [সূত্র : রয়টার্স]