The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫

‘দেশের এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়ব নাখো’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশিদের আম গাছের ডাল কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে বিএসএফ ও ভারতীয়রা। বিজিবি স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে তাদের এই কার্যক্রমকে রুখে দিয়েছে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে জেলা ও উপজেলার আশপাশের সাধারণ জনগণ বিজিবির সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নেন এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নানান স্লোগান দেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ সীমান্তে দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিকেলে চৌকা ও কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেল ও ভ্যান যোগে সীমান্ত এলাকার দিকে আসছেন নানা বয়সী লোকজন। এ সময় তারা লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত অবস্থান নেন এবং ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নাো স্লোগান দেন। অপরদিকে ভারত সীমান্তের অপর প্রান্তে অবস্থান নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে বিএসএফের সদস্যদের। এছাড়া সাধারণ জনগণ যাতে সীমান্তের কাছাকাছি ভিড় না করেন সেদিকে নজর রাখছেন বিজিবির সদস্যরা।

সারোয়ার জাহান নামে এক যুবক বলেন, বেলা ১১টার দিকে একবার গন্ডগোল হয়েছিল এবং ২টার দিকে বিএসএফ আবার ভারতের নাগরিকদের মাইকিং করে ডেকে নিয়ে এসে ইট, বোমা, ককটেল অর্থাৎ তাদের যত কিছু আছে সব কিছু নিয়ে এসেছে। তারপর বিএসএফসহ ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশিদের ওপর পাথর, ককটেল, বোমা যতকিছু আছে সব নিক্ষেপ করেছে। তাদের এই পাথর বোমা লেগে দুই-তিনজন হাসপাতালে ভর্তি আছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের একটাই কথা- বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেওয়া হবে না।

কিরণগঞ্জ সীমান্তের উত্তেজনাকর অবস্থা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও দেখে সীমান্ত এলাকায় ছুটে আসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার মিলন নামে এক যুবক। তিনি বলেন, এটা আমাদের মাতৃভূমি। আমরা এক চুল পরিমাণ ছাড় দেব না ইনশাআল্লাহ।

বিনোদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান নামে আরেকজন বলেন, ‘এখানে বিডিআর (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে তুমুল ঝগড়া ও উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের আমের গাছপালা তারা (বিএসএফ) কেটে পালিয়ে গেছে। এছাড়া আমাদের দুই তিনজনকে আহতও করা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়ব নাখো (না)। প্রয়োজনে আমরা শহীদ হয়ে যাব, কিন্তু মাটি এক ইঞ্চিও ছাড়বো নাখো।

মেহেদী হাসান মিরাজ নামে আরেকজন যুবক বলেন, আমরা এক যুদ্ধ শেষ করেছি এবং একটা স্বাধীনতা পেয়েছি। দরকার হলে আমরা এখানে যুদ্ধ শুরু করব ও ঘোষণা করব।

৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, চৌকা ও কিরণগঞ্জ বর্ডার এলাকার মাঝামাঝি স্থানে ১৭৭ এর থ্রি-এস বরাবর কিছু আম গাছ ছিল। সেখানে আম গাছ কাটাকে নিয়ে ভারতীয় নাগরিক ও বাংলাদেশের নাগরিকদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে দুই দেশের জনগণ নিজ নিজ দেশের জন্য শূন্য লাইন বরাবর দাঁড়িয়ে যায়। এ ব্যাপারে আমরা বিজিবির জনবল বৃদ্ধি করেছি। এছাড়া বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেটি অন্যায় হয়েছে। এই বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেবে এবং এটার বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমরাও গ্রাউন্ডে আছি। এছাড়া শূণ্য লাইন কেউ যেন অতিক্রম না করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক জনগণ আমাদের পাশে আছে এবং সামনেও থাকবে। আমরা তাদেরকে (জনগণকে) রিকুয়েস্ট করতে চাই শূন্য লাইন থেকে দূরে সরে আসার জন্য। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সব সময় প্রস্তত আছি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.