মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ ১৭ দিনের ছুটিতে শিক্ষার্থীরা বাসায় চলে গেলেও ফাঁকা নেই মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ঈদের বন্ধের পর প্রতিদিন সকাল থেকে পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ঈদের দিন থেকে যা অনেকটাই বেড়েছে। স্থানীয় দর্শনার্থীদের পাশাপাশি দূরবর্তী এলাকা থেকেও বাড়ছে দর্শনার্থীদের সংখ্যা।
৯ জুন শনিবার রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইদ-উল-আযহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপলক্ষে ১২ জুন বুধবার থেকে ২৭ জুন বুধবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
বৃহষ্পতি ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আরও দুদিন বেশি বন্ধ পাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১৭ দিনের এই বন্ধ থাকার পরেও ফাঁকা নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দেখা মিলে দর্শনার্থীদের ভিড়। সব থেকে বেশি ভিড় থাকে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ছোট থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষের দেখা মিলে এ সময়।
দর্শনার্থীদের মধ্যে নাজনীন নিলুফা নামে একজন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যের ভিডিও ধারণ করছিলেন। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু টাঙ্গাইলে অবস্থিত আমি সময় পেলেই এখানে ঘুরতে আসি। এখানকার পরিবেশ বারংবারই আমার নজর কেড়েছে । এক কথায় বলতে গেলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।”
কয়েকদিনের টানা বন্ধে কর্মজীবীদের মাঝে খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য ছুটির প্রথমদিকে তেমন দর্শনার্থী ছিল না। ঈদের দিন থেকেই বেড়েছে এর সংখ্যা। সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীদের দেখা মিলে বুদ্ধিজীবী চত্বর, রানীঘাটলা, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, প্রশাসনিক ভবন ও ৩য় একাডেমিক ভবনের সামনে।
ঈদের ছুটিতে কিশোরগঞ্জ থেকে টাঙ্গাইলে আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে আসা জুবায়ের আহমেদ নামে একজন বলেন, “আমি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। আমার নানার বাসা ময়মনসিংহ বাকৃবি ক্যাম্পাসে পাশে। সেই ক্যাম্পাসেই অধিকাংশ সময় কাটে। এই ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ আলাদা, ক্যাম্পাসটি ছোট হলেও অনেক সাজানো গোছানো। সেখানে (বাকৃবিতে) এত বড় বড় বিল্ডিং নেই। এটি যে কোনো মানুষের পছন্দ হওয়ার মতো ক্যাম্পাস। আমার প্রথম দেখাতেই অনেক পছন্দ হয়েছে।”
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুভুতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শাকিল মাহমুদ শাওন (সহকারী অধ্যাপক,অর্থনীতি বিভাগ) জানান, “ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানা ধরণের ফল,ফুল ও ঔষুধি বৃক্ষ লাগানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন সর্বক্ষণ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করা হয়।”
দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দর্শনার্থীরা যেন ক্যাম্পাসের সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রেখে পরিবার নিয়ে সুন্দর সময় কাটায়।”
পাশাপাশি তিনি দর্শনার্থীদের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটানোর আহব্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আকবর যার বেড়ে ওঠাও এই ক্যাম্পাসে। তিনি বলেন, “আমার বাসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে হওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি সময় এখানেই কাটে। এখানে পড়ার আগে থেকেই ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া। তাই সবসময় দেখে আসছি ঈদের সময় সবার অফিস বা কর্মক্ষেত্র ছুটি থাকে, তখন পরিবার পরিজনদের নিয়ে সময় কাটানোর জন্য এই জায়গা বেছে নেন অনেকে। এতো বড় ফাঁকা জায়গা এবং সুন্দর পরিবেশ টাঙ্গাইলের কোথাও নেই। গত কয়েকবছর ধরে লোকজনের ভীড় বেশ চোখে পড়ার মতো। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোগত দিক দিয়েও অনেক পরিবর্তন হয়েছে, সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।”