সাতক্ষীরার তালা উপজেলার লাউতাড়া গ্রামে চিরকুট লিখে মৃত্যুর জন্য প্রেমিককে দায়ী করে আত্মহত্যা করেছেন প্রিয়াংকা সরকার নামে এক কলেজছাত্রী। ঘটনার পরপরই বাড়ি থেকে পালিয়েছেন প্রেমিক রিপন।
শনিবার (১৫ জুন) সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে, শুক্রবার (১৪ জুন) রাতে প্রিয়াংকার বাবা বাদী হয়ে প্রেমিক রিপন ও তার বাবা বিকাশ সরকারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। বিকেলে প্রিয়াংকার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাতবাস গ্রামের দরিদ্র মিঠুন সরকারের মেয়ে প্রিয়াংকা সরকারের সঙ্গে একই গ্রামের খ্রিস্টন সম্প্রদায়ের হাউজ চার্চ পালক বিকাশ সরকারের ছেলে রিপন সরকারের দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রিপন ও প্রিয়াংকা উভয়ে সাতক্ষীরায় অনার্সে পড়তো। এই প্রেমের বিয়েতে প্রিয়াংকার পরিবার রাজি হলেও প্রেমিক রিপনের বাবা পালক বিকাশ সরকার আপত্তি তোলেন। একপর্যায়ে রিপনও প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান। এরই জেরে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রিয়াংকা সরকার নিজ ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর জন্য প্রেমিক রিপনকে দায়ী করে একটি চিরকুট লিখে যান প্রিয়াংকা।
চিরকুটে লেখা ছিল- ‘তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে ছেড়ে যাবে না, তা যায় হয়ে যাক। তুমি ঠকিয়েছো আমাকে। তুমি শেষ করে দিলে সবকিছু। আমার মৃত্যুর জন্য তুমি দায়ী।’ আরো লেখা ছিল ‘তোমার মতো কেউ ভালোবাসবে না আমাকে। আবার তোমার মতো ক্ষতিও করবে না কেউ। বাই (ভালো থেকো) (রিপন প্রিয়াংকা)।’
নোটবুকের ওই একই পৃষ্ঠায় চিরকুটের ওপরের অংশে রিপন নিজ হাতে প্রিয়াংকাকে কিছু নির্দেশনা লিখে দেন। যেখানে রিপন প্রিয়াংকার উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘১। যারা ব্যাড তাদের সঙ্গে চলাফেরা করা যাবে না, ২। এমন কোনো বান্ধবী থাকবে না যে খারাপ, ৩। ক্লাস টাইম শেষ হলে আমার ডিপার্টমেন্ট এর কাছে আসবা।’ লেখার শেষাংশে রয়েছে রিপনের সই।
তালা থানার ওসি মো. মমিনুল ইসলাম জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় মেয়ের বাবা মিঠুন সরকার বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে তালা থানায় রিপন ও তার বাবা বিকাশ সরকারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে একটি মামলা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, আত্মহত্যার পরপরই রিপন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত। শনিবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।