তাফহীম, কক্সবাজারঃ তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটন খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৬০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। এ কয়দিনে তিন লাখেরও বেশি পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করেন। এতে খুশি সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান মালিকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে টানা তিনদিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠে কক্সবাজার। শহরে হোটেল-মোটেল পর্যটকরা আসতে শুরু করেন। শুক্রবার সকাল থেকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে।করোনা দুর্যোগ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে পর্যটন সংকট দেখা দেয়। এদিকে নাব্য সংকটের দোহাই দিয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ রুটে দুটি জাহাজ চলাচল করলেও এর ব্যয়ভার সাধারণের নাগালের বাইরে। ফলে কক্সবাজার বেড়াতে এসে যারা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ তালিকায় রাখেন তাদের অনেকে কক্সবাজার বেড়ানো স্থগিত রাখেন। সে ধাক্কা কাটিয়ে এবার কক্সবাজারে পর্যাপ্ত পর্যটক এসেছেন।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) উপদেষ্টা মফিজুর রহমান বলেন, হতাশায় আলো দেখিয়েছে বড়দিনের ছুটি। সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে বড়দিনের ছুটির সুযোগকে কাজে লাগাতে ভ্রমণপ্রেমীরা কক্সবাজার এসেছেন। এ তিনদিনের জন্য অনেকে আগাম বুকিং দিয়ে উঠেন হোটেল-মোটেল ও কটেজে। ব্যয়বহুল জেনেও অনেকে আগাম টিকেট কেটেছে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলা কর্ণফুলী ও বার আউলিয়া জাহাজে। ফলে সেন্টমার্টিনেও এবারে আগাম কিছু বুকিং পেয়েছে সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, টানা বন্ধে আমাদের আশা ছিল কক্সবাজারে সাড়ে ৫ থেকে ৬ পর্যটক আসবেন। কিন্তু তা হয়নি। এসেছেন সাড়ে তিন লাখের মতো পর্যটক। এরপরও আমরা আনন্দিত।
কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, সমিতির তালিকাভুক্ত শতাধিকসহ কক্সবাজার পর্যটন জোনে চার শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। পর্যটক শূন্যতায় সবাই দুর্বিষহ দিন কাটিয়েছি। গত তিনদিন সবার কমবেশি ব্যবসা হয়েছে।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানিয়েছেন,
বলেন, পর্যটনে আয়ের হিসেব হয় জনপ্রতি খরচের ওপর। কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা সবধরনের সেবা গ্রহণে গড়ে ১২ হাজার টাকা খরচ করেন। সেই হিসেবে তিনদিনে ২৬০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে।
হোটেল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে পর্যটক থাকলে ব্যবসায়ীরা উৎফুল্ল থাকে। ব্যবসা ভালো থাকলে ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ নানা দেনা শোধ করতে পারি।সৈকতের ব্যবসায় হলো পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল। মানুষ আছে আমাদের ব্যবসা আছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ সহকারী চৌধুরী মিজানুর মজ্জমান জানান, পর্যটন নগরী হিসেবে কক্সবাজারে আগত সবাইকে নিরাপদ রাখা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সেভাবেই পর্যটক নিরাপত্তায় সতর্ক রয়েছি।পর্যটকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে সাথে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান বলেন, আগতদের সুবিধার্থে কলাতলির ডলফিন মোড়ে তথ্য সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে মোতায়ন রয়েছে। হয়রানি বন্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক টিম মাঠে ছিল।