The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

তারুণ্যের ভাবনায় ঈদুল আযহা

পবিত্র ইদুল আযহা জানান দেয়, শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা। মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দ্যেশ্যে পশু কোরবানি করেন। কোরবানির ঈদ মুসলিমদের কাছে আলাদা গুরুত্ব বহন করে থাকে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ত্যাগের মহিমা অনুধাবন করতে পারে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেই ভাবনাগুলোই তুলে ধরেছেন দি রাইজিং ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাকিবুল ইসলাম।

ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত ঈদুল আজহা:

ঈদ শব্দের মাঝে রয়েছে আনন্দ, যার শাব্দিক অর্থ বারবার ফিরে আসা। তেমনি ত্যাগের মহিমা নিয়ে আবারো এসেছে ঈদুল আজহা। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। পুরনো স্মৃতির সরণিতে যত আনন্দঘন মুহূর্ত জমা আছে তার মধ্যে শৈশবের ঈদ উদযাপন অন্যতম। ঈদ আসলেই নতুন জামা কেনার জন্য বাবার কাছে বায়না করা, ঈদের আগে নতুন জামা কাউকে না দেখানো। তাছাড়া চাঁদ রাতের মেহেদী উৎসবের আনন্দ ঈদের আনন্দের চেয়ে কম নয়। তবে সময়ের স্রোতে বড় বেলার ঈদ উদযাপনে পরিবর্তন আসে। এবার ঈদে পরিবারের প্রিয়জনদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেবো এবং তাদের সাথে সময় কাটাবো। ঈদুল আজহা শুধু আনন্দের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, বরং পশু উৎসর্গ করার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন, সমাজের গরিবদের প্রতি দায়িত্ব পালনের শিক্ষা দেয়।

রুহানা আক্তার বৃষ্টি
শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ।

 

অর্জন ও বিসর্জনের উৎসব ইদুল আযহা:

সারাদিন ক্লাস, প্রেজেন্টেশন, ভাইবা এবং পরীক্ষা, এরপর আবার টিউশন কিংবা কোচিং সবমিলিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করার মধ্যেই চলে এলো পবিত্র ইদুল আযহা। দীর্ঘ দুইমাস পর পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আবারও ইদের আনন্দ ভাগাভাগি করবো, এই ভেবেই ব্যাচেলর লাইফের সকল কষ্ট দূর হয়ে গেলো। চাঁদরাতে সবার সাথে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময়, পরিবারের সদস্যদের সাথে একসাথে ইদের নামাজ থেকে শুরু করে কোরবানি, ইদের প্রতিটি বিকেলে বন্ধুদের সাথে মেঘনার তীরে আড্ডা, ছোট ভাই-বোনদেরকে নিয়ে ইদ উপলক্ষে নানাবাড়ি বেড়াতে যাওয়া, কাজিনদের সাথে আড্ডা ও মজা: সবমিলিয়ে প্রতিবছর ইদুল আযহা এক অন্যরকম ভালোলাগা নিয়ে আবির্ভূত হয়। পরিশেষে, ইদ জীবনে বয়ে আনুক সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি। ইদ মোবারক।

মোঃ আমিরুল ইসলাম রোকন
শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ

 

ছড়িয়ে পড়ুক ত্যাগের মহিমা সকলের মাঝে:

মুসলিম জাতি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দিয়ে ঈদ -উল আযহা উদযাপন করে। এই কোরবানির উদ্দেশ্য শুধু লোক দেখিয়ে পশু কোরবানি দেওয়া নয়, মানুষের অন্তরের পশুত্বকেও বিসর্জন দেয়া। কোরবানি মানে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে কোন ত্যাগ করতে সর্বদা প্রস্তুত থাকা। কুরবানীর পশুর গোশতে পাড়া- প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন, দরিদ্র-নিপীড়িত সকলের হক আছে। এ থেকে কুরবানী আমাদের সকলকে ভেদাভেদ থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেয়। জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হয় পবিত্র ইদুল আযহা। খুশির এ দিনটির শুরু হয় আব্বু ভাইয়ার ইদের নামাজ দিয়ে। ধনি-গরিব নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে ইদের সালাত আদায় করে। আর এদিকে পাশাপাশি চলতে থাকে আম্মুর পায়েশ,পোলাও কোরমা রান্নার কাজ। তারপর আসে পশু কোরবানির পালা। আত্মীয় স্বজনদের ইদের শুভেচ্ছা জানানো, বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে আড্ডা চলতেই থাকে ইদের দিনভর কোরবানি কে শুধু আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে না নিয়ে এর তাৎপর্য মহাত্ত্ব এবং এর মূল উদ্দেশ্যকে আমাদের জীবনে প্রয়োগ করলে আমরা একটি সুস্থ বাসযোগ্য পৃথিবী পাবো, যেখানে প্রত্যেকের মধ্যে থাকবে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতা পূর্ণ একটি সম্পর্ক।

মাশরাফি রহমান নিতু
শিক্ষার্থী, গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

 

ঈদ হোক আত্মত্যাগের ও ভালোবাসার:

মুসলিমদের জন্য বিশেষ দুটি ঈদ। একটি ঈদুল ফিতর, অন্যটি ঈদুল আজহা।জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হয় পবিত্র ইদুল আজহা।ঈদের দিনটি শুরু হয় সাতসকালে মামনীর ডাকে আর আব্বু ভাইয়ার নামাজ এ যাওয়া দিয়ে। নামাজ শেষ করে তাকাওয়া অর্জনের উদ্দেশ্য আল্লাহ নামে হালাল পশু জবাই করা।এরপর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, দরিদ্র- মিসকিনের মাঝে মাংস বিতরণ। এতে রয়েছে এক অন্যরকম আত্নতৃপ্তি। আত্মীয়-স্বজনদের ঈদের শুভেচ্ছা জানানো, বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে আড্ডা চলতেই থাকে দিনভর। মাংস পবিত্র ইদুল আজহা শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা বয়ে আনে।ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয় শরীর -মন।দূর হয় সকল ভেদাভেদ। এই ঈদের মাধ্যমে যেমন মানুষে মানুষে সম্পর্ক মজবুত হয়েছে তেমনি দূর হয়েছে ধনী গরীবের বৈষম্যও।

মেহনাজ বিনতে আলী নাসা
শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ।

 

ঈদুল আজহা ত্যাগের উৎসব:

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। মুসলমানদের জন্য বছরে দুইবার এই ঈদ আসে। তন্মধ্যে কুরবানির মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মধ্য দিয়ে পালিত হয় পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। প্রতিবছর এ ঈদটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করি এবং বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও এ ঈদকে নানা আয়োজনে সাজিয়েছি। বন্ধুবান্ধবদের বাসায় যাওয়া, তাদের সাথে কুশল বিনিময় করা, স্মৃতিগুলো নিয়ে আড্ডা দেওয়া, তাদের সাথে বিকালবেলা কোনো একটি দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা এবারও আছে। ঈদের পরের দিন নিজ গ্রামের তরুণদের সংগঠন এর আয়োজনে বিবাহিত ও অবিবাহিত দলের মধ্যে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হবে। সেখানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করব। ঈদ উপলক্ষে আমরা একটি ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছি। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি রাজসিক নাটোর এর ঐতিহ্যের প্রতীক দীঘাপতিয়ায় অবস্থিত উত্তরা গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে থাকবে নাচ, গান, খেলাধুলাসহ সাংস্কৃতিক বিভিন্ন পর্ব। গত ঈদে বাড়িতে বেশি সময় দিতে পারি নি। তাই এই ঈদে বাসায় একটু সময় দিব। তাই এবারের ঈদটিও কাটবে অনেক আনন্দে। পরিশেষে বলতে চাই, প্রতিটি মানুষের কাছেই এই ঈদ হোক অনেক আনন্দের।


মো: হৃদয় ইসলাম
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ

 

ঈদুল আজহার ত্যাগের মহিমা ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র:

বছর ঘুরে আবারো চলে এসেছে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম সম্প্রীতির উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এ ঈদ মূলত ত্যাগের উৎসব; উৎসবের সাথে সাথে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার বার্তা দিয়ে যায়। সব ভেদাভেদ ও মানবীয় হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে একত্রে ঈদের নামাজ আদায় করে পারস্পরিক আলিঙ্গনের পর পশু কোরবানির মাধ্যমে মহা সমারোহে পালিত হয় ঈদুল আজহা।পশু কোরবানি মূলত পশুত্ব তথা নির্মমতা,হিংসা,ক্রোধ বিসর্জন দিয়ে সুন্দর ও পবিত্র মনের অধিকারী হওয়ার শিক্ষা দেয়। আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজের শ্রেণীগত বিভেদ ভুলে অসহায় ও সর্বস্তরের মানুষের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়াই ঈদের বার্তা। কেবল ধর্মীয় উৎসবই নয়; বরং ত্যাগের দীক্ষায় আত্মার পরিশুদ্ধি ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনের অনুশীলনও বটে। এ ত্যাগের দীক্ষা কেবল শব্দ হিসেবে সীমাবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র,এমনটাই কাম্য।

আছিয়া তাবাচ্ছুম শূচী
শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ।

 

ঈাদুল আজহা আমাদের ত্যাগের দীক্ষা দেয়:

ঈদুল আজহার প্রসঙ্গ এলেই মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিমের (আ.) সেই ত্যাগ ও গৌরবময় ঘটনা আমার স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠে। নিজেদের জীবন, সম্পদ ও জ্ঞানকে আল্লাহর রাস্তায় অর্থাৎ মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করাই আমাদের প্রকৃত কোরবানি। আমার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর “শহীদী ঈদ” কবিতায় খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন বর্তমানের লোকদেখানো কোরবানির অর্থহীনতা, কোরবানির নামে ভোগের নির্লজ্জ মহড়া এবং সত্যিকারের কোরবানি নমুনা। সত্যিকারের কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য এনে দেয়। যে আল্লাহর নৈকট্য পাবে তার কোনো হতাশা, বেদনা, দুঃখ, যন্ত্রণা, না পাওয়ার কষ্ট কিছুই থাকবে না। আল্লাহ হলেন সন্তষ্টির উৎস। এবার ঈদে আমার প্রার্থনা এই যে মহান আল্লাহ যেন আমাদের ধর্মের প্রকৃত আদর্শ ধারণ করার সক্ষমতা প্রদান করেন, মুত্তাকি, মো’মেন, যুক্তিশীল, বিজ্ঞানমনস্ক, পরিশ্রমী হওয়ার এবং সুস্থ থাকার তওফিক দান করেন।

শামীমা আক্তার
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ

 

ইদ হোক সবার আনন্দের মিলনকেন্দ্র:

ইদ মানেই খুশি, ইদ মানেই আনন্দ। ইদ মুসলমানদের এমন এক ধর্মীয় উৎসব যা শিশু, তরুণ, বৃদ্ধ সকলের মনে আনন্দের ফোয়ারা তৈরি করে। ইদের চাঁদ দেখার পর থেকেই মনে ইদের আনন্দ চলে আসে। সেই সাথে কুরবানির ইদ হলো কুরবানির পশু নিয়ে গড়ে উঠা আর এক আবেগ। কুরবানির পশু কিনে আনার পর বয়স্ক ব্যক্তিটি সহ পরিবারের ছোট্ট শিশুটিও সেই পশু নিয়ে নিয়ে অনেক আবেগের মুহূর্ত গড়ে তুলে। সেই পশুকে সকালে উঠে দেখতে যাওয়া, বাবার সাথে তাকে গোসল করানো, খাবার দেয়া ইত্যাদি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতি সেই ছোট্ট শিশুটিকেও পশুটি কোরবান এর পর কাঁদায়। এটিই কোরবানি ইদের এক অমায়িক সৌন্দর্য। এছাড়াও ইদের দিন হলো এমন একটি দিন যেদিন আমরা আমাদের এই ব্যস্ত জীবনের সকল ব্যস্ততাকে দূরে রেখে পরিবারের খুব কাছে অবস্থান করতে পারি। পরিবারের মুরুব্বিদের সাথে অনেক সময় ধরে গল্প করতে পারি, তাদের আদর ভালোবাসা নিতে পারি। আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করে আন্তরিকতা বাড়াতে পারি। সর্বপরি ইদ হলো অনেক আনন্দের একটি দিন। যেদিন আমরা আমাদের যান্ত্রিক জীবনের গন্ডিকে ফেলে রেখে পরিবারকেন্দ্রিক হতে পারি। আর তাই আমার প্রত্যাশা এবারের ইদ হোক সবার আনন্দ মিলনকেন্দ্র।

নুসরাত জাহান
শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.