ঢাবিতে গাড়ি চাপায় নারীর মৃত্যু: নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষকের গাড়ি চাপায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত যানবাহন বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এতে সংহতি জানিয়েছেন বেশকিছু সাধারণ শিক্ষার্থী।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের সামনে মশাল হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্র ইউনিয়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি সমাবেশ ও সেখান থেকে ভিসির বাসভবন পর্যন্ত একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্র অধিকার পরিষদ। এতে সাধারণ শিক্ষার্তীরাও যোগ দেয়।
ঢাবিতে নারীকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেল প্রাইভেটকার : চালক ঢাবির সাবেক শিক্ষক
বিক্ষোভ মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র অধিকারের ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়ি চলাচলের জন্য সঠিক কোনো নিয়ম মানা হয় না। গাড়ি উল্টোপথে আসতেছে কি না তা দেখার জন্য কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব কিন্তু আজকে যে একজন নারীকে গাড়ির নিচে পিষে হত্যা করা হয়েছে সেই ঘটনায় ঢাবি প্রক্টর দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের দায় বিশ্ববিদ্যালয়কে অবশ্যই নিতে হবে।
ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আদনান আজিজ চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজকে যে হত্যা হইছে এটাকে একটা হত্যা হিসেবে গণনা করতে হবে। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং একজন সাবেক শিক্ষকের দ্বারা নারী হত্যা করা হয়েছে। ওই শিক্ষক যদি নারীকে গাড়ির নিচে চাপা পড়তে দেখে গাড়ি থামিয়ে দিতো তাহলে সেটি দুর্ঘটনা হতো কিন্তু তিনি সেটা করেননি বরং তিনি ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে নীলক্ষেত পর্যন্ত নিয়ে যায়। এর দ্বারা হত্যার মনিফ (উদ্দেশ্য) বোঝা যায়। এটা মার্ডার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক এই হত্যা ঘটিয়েছে এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে যে আমরা এটার জন্য নিন্দিত ও লজ্জিত।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা বেশ কয়েকটি দাবি জানায় ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেগুলো হলো— বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসাতে হবে। কোনো প্রাইভেট গাড়ি বা অতিরিক্ত যানবাহন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং যে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে উদাসীন সেই প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।