ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলন’ নামে নতুন একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সংগঠনটি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কতৃক হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা কিশোর ফেলানী খাতুনের স্মৃতিকে প্রেরণা হিসেবে ধারণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিরক্ষা, স্বনির্ভরতা এবং জাতীয় স্বার্থকে মূলনীতি হিসেবে ধরে এ সংগঠনটি কাজ করবে বলে জানানো হয়।
সংগঠনটির ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদা বারবার নানা ধরনের আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। রাজনৈতিক আধিপত্যবাদ, অর্থনৈতিক শোষণ, সাংস্কৃতিক দখলদারিত্ব এবং সীমান্তে অমানবিক হত্যাকাণ্ড আমাদের জাতিকে বারবার রক্তাক্ত করেছে। এসব আঘাত আমাদের স্বপ্নময় ভবিষ্যতের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক নির্মমভাবে কিশোরী ফেলানী খাতুনকে হত্যা করা হয়। কাটাতারে ঝুলে থাকা তার নিথর দেহের ছবি আমাদের জাতিকে চিরদিনের জন্য লজ্জিত ও ব্যথিত করে রেখেছে। আজও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, যা আমাদের জাতীয় আত্মমর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের ওপর এক গুরুতর আঘাত। ফেলানী হত্যাকাণ্ড আমাদের জন্য এক প্রতীক, এটি সীমান্ত হত্যার নিষ্ঠুর বাস্তবতা এবং আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর চলমান আগ্রাসনের উদাহরণ। এর মধ্য দিয়ে আমরা উপলব্ধি করেছি, শুধু প্রতিবাদ নয়, আমাদের একটি সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি।
সংগঠনটির লক্ষ্য ও অঙ্গীকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়-
১. সীমান্ত হত্যার অবসান: সীমান্তে প্রতিটি হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করা এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।
২. রাজনৈতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান: যেকোনো ধরনের বিদেশি রাজনৈতিক প্রভাব ও হস্তক্ষেপ বন্ধ করা এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে সব দলের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা।
৩. অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই: বৈষম্যমূলক বাণিজ্যচুক্তি, অন্যায্য ঋণ ও প্রকল্প চাপিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা প্রতিহত করা।
৪.সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদ: আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্যকে রক্ষার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মোকাবিলা করা।
৫. জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি রচনা: সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা।
ঘোষণাপত্র আরও উল্লেখ করা হয়, কাটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর স্মৃতিকে প্রেরণা হিসেবে ধারণ করে আমরা ‘আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলন’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই আন্দোলন হবে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মঞ্চ। দেশের প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, আমাদের এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করবেন’ এই আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমরা কখনো পিছপা হব না।