গানের তালে ভূতের নাচ দেখেছেন কখনো? ভূতের সমাহারে সুদূর আমেরিকা থেকে এসেছে এক ভূত, এরপর আরব আমিরাত থেকে অ্যারাবিয়ান ভূত, তারপর একে একে রাশিয়া ও শ্রীলঙ্কাসহ বহু দেশের ভূত এই ফ্যাশন শোতে উপস্থিত হয়।
অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? ঘটনা অবাস্তব মনে হলেও ঠিক এমনটাই ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অনুষ্ঠিত ভূত উৎসবের এক মঞ্চে।
মঞ্চে তখনো সব ভূত মিলে গানের তালে নাচ পরিবেশন করছে। তখনই ভূতের রাজা-রাণী তাদের ছোট-বড় ডজন খানেক সন্তান-সন্ততি নিয়ে উপস্থিত হয়ে মানুষের সঙ্গে চালাতে লাগলো রম্য কথোপকথন। এভাবে নাচ, গান, ফ্যাশন শো, রঙ্গরস ও নাটিকার সমন্বয়ে যেন ভূতদের আনন্দময় এক মিলনমেলায় রূপ নিল পুরো প্রাঙ্গণ।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্যার এ এফ রহমান হলের বর্ধিত শাহনেওয়াজ হলে চারুকলা অনুষদের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেছে এ ভূত উৎসব। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবসের বিরুদ্ধে আনন্দ ও প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবছরই আয়োজিত হয়ে আসছে এই ভূত উৎসব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সাবেক শিক্ষার্থী শেখ মনিরুজ্জামান লিটন। তিনি ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষের ও ড্রয়িং এন্ড পেইন্টিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এই ভূত উৎসব আয়োজনের সঙ্গে শুরু থেকেই তিনি ছিলেন এবং প্রতিবছরই এই অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত থাকেন। তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠান মূলত ২০০০ সালের দিকে শুরু হয়। আমি তখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। ওই সময় ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস ছিল। তখন অনেকেই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরতো, কিন্তু অনেকেরই ছিলনা। যাদের ছিলনা তাদের মধ্যকার কিছু সিনিয়র ভাইয়েরা প্রেম ও গার্লফ্রেন্ডের অভাবে হঠাৎ করেই উল্টাপাল্টা পোশাক পরিচ্ছদ পরে, রঙ লাগিয়ে, ভূত সেজে হলের বাইরে বের হয়ে পড়ে। পরে আমরা নীলক্ষেত থেকে মাইক নিয়ে আসলাম এবং ওই ভাইয়েরা ভূত সেজে বিভিন্ন অভিনয় করলেন। অনেক নাচ-গান হল, মজা হল। পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে প্রতিবছর এটা আরও ভাল করে করবো। এরপর থেকে প্রতিবছরই এই আয়োজন করা হয়।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ভূত উৎসবে আগত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনুষ্ঠানের প্রতিটি চরিত্রই ভাল লেগেছে এবং আকর্ষণীয় ছিল। ভূতদের মজার মজার জোকস, নাচ, গান বেশ মজাদার ছিল।’