The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪

ডেঙ্গু হলে কী খাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: ডেঙ্গু হল একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগের ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরব্যথা এবং র‌্যাশ। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, এবং সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করা খুবই জরুরি।

ডেঙ্গুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। সঠিক খাবার গ্রহণ করলে রোগীর অবস্থার উন্নতি হতে পারে এবং ডিহাইড্রেশন, যা ডেঙ্গুর একটি প্রধান সমস্যা, তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ কারণে, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে, যা তাদের সুস্থতার জন্য সহায়ক হবে।

এদিকে, কিছু খাবার রয়েছে যা এ সময়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এই খাবারগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং রোগীর অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবার, পাশাপাশি যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত, সেগুলি সম্পর্কে আলোচনা করব।

কোন খাবার গ্রহণ করবেনঃ
১. পানি: ডেঙ্গুতে ডিহাইড্রেশন বড় সমস্যা। তাই প্রচুর পানি পান করতে হবে। সঠিক হাইড্রেশন নিশ্চিত করার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

২. পুষ্টিকর খাবার: ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খিচুড়ি, দাল, ভাত এবং সবজি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। এই খাবারগুলো সহজে হজমযোগ্য এবং শরীরের জন্য উপকারী।

৩. ফল: তাজা ফল যেমন পেঁপে, কলা, এবং আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর চিকিৎসায় উপকারী বলে মনে করা হয়। এটি প্লাটিলেট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৪. প্রোটিন: প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মুরগির মাংস, মাছ, ডাল এবং চিয়া বীজ খাবারের তালিকায় রাখা উচিত। এগুলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

৫. দুধ এবং দুধের পণ্য: দুধ, দই, এবং পনিরের মতো দুধের পণ্য পুষ্টিতে ভরপুর এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৬. ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার: সবজি, বিশেষ করে পালং শাক, বিট, গাজর, এবং ব্রোকলি খাওয়া উচিত। এগুলোতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকে, যা শরীরকে শক্তিশালী করে।

৭. অ্যালকোহল: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকা উচিত। এটি শরীরের ডিহাইড্রেশন বাড়ায় এবং রোগীর অবস্থা আরও খারাপ করতে পারে।

৮. মসলা ও তেলযুক্ত খাবার: বিরিয়ানি, ফাস্ট ফুড, এবং অন্যান্য অতিরিক্ত মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে।

৯. শর্করা: অতিরিক্ত চিনি ও শর্করা সমৃদ্ধ খাবার, যেমন কেক, পেস্ট্রি, এবং সফট ড্রিঙ্কস থেকে বিরত থাকা উচিত। এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং ডেঙ্গুর চিকিৎসার সময় সমস্যা তৈরি করতে পারে।

১০. কফি এবং চা: কফি এবং চা পান করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, এই পানীয়গুলো ডিহাইড্রেশন বাড়াতে পারে।

১১. নিষেধাজ্ঞাসম্পন্ন খাবার: নিষিদ্ধ খাবার যেমন তেলেভাজারি এবং ভাজা খাবার খাওয়ার পরিহার করা উচিত। এগুলো পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং শরীরের শক্তি কমায়।

ডেঙ্গু একটি গুরুতর ভাইরাসজনিত রোগ, যা সঠিক খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে মোকাবেলা করা সম্ভব। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তাই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ ফল এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে রোগীর অবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে এবং দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়তা করে।

ডেঙ্গুর সময়ে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে রোগীর স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে এবং চিকিৎসার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে খাবারের দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শও গ্রহণ করা উচিত। সুস্থ থাকার জন্য সঠিক পুষ্টি অপরিহার্য, এবং এই বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.