নোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ ডিগ্রি পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত ৫৭ দিন ধরে অচলাবস্থায় রয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ (বিএমএস) বিভাগ। একই দাবিতে রবিবার(১৬ জুলাই) সকাল ১১টায় বিভাগটির শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
পরে আন্দোলনের একপর্যায়ে তারা প্রশাসনিক ভবনের গেইট আটকে দিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। পরবর্তীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকীর এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দিব্যদ্যুতি সরকারের সঙ্গে দেখা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
যা বলছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা-
২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ (বিএমএস) বিভাগ চালু হয়। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্তমানে দুটি ব্যাচ স্নাতক শেষ করে বের হলেও বিভাগটির নির্দিষ্ট বিষয় কোড না থাকায় অধিকাংশ সরকারি চাকরিতে তারা আবেদন করতে পারছেন না। বিভাগের নাম বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ অপরিবর্তিত রেখে ইতিহাস অথবা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ডিগ্রি চান তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন সাব্বির বলেন, আমরা গত দুইমাস ধরে আন্দোলন করছি। আমাদের বিভাগের স্নাতক সম্পন্ন করা দুটি ব্যাচ চাকরিতে আবেদন করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সাবজেক্ট সম্পর্কিত আমাদের কোনো চাকরী নেই। আমাদের দাবি আমরা বিভাগের নাম অপরিবর্তিত রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিগ্রি পরিবর্তন চাই। আমাদের বিষয়টি নিয়ে পূর্বে প্রশাসনের পাঠানো চিঠি আমরা সন্তোষজনক মনে করি না। চিঠিতে এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন(ইউজিসি) থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠানো সুপারিশ করা হয় যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং সময়সাপেক্ষ। আমরা প্রশাসনকে বলেছি নতুন করে আমাদের দাবি অনুযায়ী চিঠি পাঠাতে।
ইউজিসির প্রতিনিধি প্রেরণের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ইউজিসি থেকে প্রতিনিধি প্রেরণের সুযোগ নেই, বরং এটি সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি দল এসে ইউজিসির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দিব্যদ্যুতি সরকার বলেন, শিক্ষার্থীরা যেভাবে চাচ্ছেন সেভাবেই চিঠি পাঠানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আমরা বলব।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাকী বলেন, আমরা পূর্বে ইউজিসিতে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীরা সেই চিঠি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের চাওয়া অনুযায়ী সংশোধন করে নতুন একটি চিঠি ইউজিসিতে পাঠাব।