ডিআইইউ প্রতিনিধিঃ ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) এর ইংরেজি বিভাগের প্রযোজনায় নাটক “এ মিডসামার নাইট’স ড্রিম” মঞ্চস্থ হয়েছে। আজ (রবিবার) বিকেল ৫.৩০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে নাটকটি মঞ্চায়ন হয়।
বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের সহোযোগিতায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগের স্নাতকোত্তর ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাসউদ আহমেদ। নাটকটির সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিলি রহমান এবং প্রভাষক নাহিদ খান সৈকত।
শেক্সপিয়ার রচিত অন্যতম জনপ্রিয় ও সারা বিশ্বের অভিনীত কমেডি নাটক “এ মিডসামার নাইট’স ড্রিম”। এথেন্সের ডিউক থিসিয়াস ও আমাজনের রানী হিপোলিটার বিবাহের পারিপার্শ্বিক ঘটনা অবলম্বনে এই নাটক রচিত। নাটকে দুই প্রণয়ী যুগল ও একদল শখের অভিনেতার অ্যাডভেঞ্চার প্রদর্শিত হয়েছে।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন- জামিল, রিমা, সায়মন, জাহিদ,আয়াত, পুন্য, রোহান, নবাব, সাকিব, ন্যান্সি, রিয়া, ওয়াহিদ, আবির, রাহাত, শাওন, স্বজন, রাসেল, নূরনবী, মুক্তা, শোভা, মিথিলা, আয়েশা, নির্জনা, শুখতারা প্রমুখ।
নাটকটিতে দেখা যায়, হার্মিয়া নামের এক যুবতীকে তার পিতা দিমেত্রিয়াস নামের এক যুবকের সাথে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু হার্মিয়া ভালোবাসে লাইসান্ডারকে। লাইসান্ডার ও হার্মিয়া সিদ্ধান্ত নেয় দূরে কোথাও পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে তারা। কিন্তু সে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। অন্যদিকে পরী রাজ্যের রাজা ওবেরন ও রানী টিটানিয়া একটি ভারতীয় বালককে কেন্দ্র করে ঝগড়ায় মত্ত হয়। ওবেরন রানী টিটিয়ার কথায় ক্ষুদ্ধ হয় এবং রানীকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
ওবেরন তার অনুচর পাককে একটি শ্বেতশুভ্র ফুল এনে দিতে বলে যে ফুলের নির্যাস ঘুমন্ত কারো চোখে এক ফোঁটা ঢেলে দিলেই ঘুম হতে জেগে ওঠে সে যাকে দেখবে তারই প্রেমে পরে যাবে। শ্রমিকদল জঙ্গলে নাটকের মহড়া দিতে এসেছে। পাক ইতিপূর্বে জাবদুলে বটমের মাথাকে গাধার মাথাতে পরিনত করে দেয়। টিটানিয়া গাধারুপী বটমকে দেখেই ভালোবেসে ফেলে। এদিকে লাইসেন্ডার ঘুম হতে জেগে হার্মিয়াকে ভূলে হেলেনাকে প্রেম নিবেদন করে। পরী রাজা ওবেরনের নির্দেশে পাক সবার দৃষ্টি হতে মোহজাল সরিয়ে দেয়।
অবশেষে মোহভঙ্গ ঘটে সবার। রাজা থিসিয়াস ও রানী হিপোলিটার বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেয় এবং একসাথে শ্রমিক দলের নাটক উপভোগ করে। এমন ত্রিমুখী প্রেমের সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় দারুণ এক হাস্যরসাত্মক পরিস্থিতি যা “এ মিডসামার নাইট’স ড্রিম” নাটকের মূল দিক।
নাটকটির মঞ্চপরিকল্পনা করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম। আলোক প্রক্ষেপণে রয়েছেন রেজওয়ানা করিম সারা এবং মিউজিকে নাহিদ সৈকত এবং রেশমি। পোষাক পরিকল্পনা ও অঙ্গরচনা তত্ত্বাবধায়ন করেছেন ফারিয়া শর্মিষ্ঠা ও রাফি। নাচের কোরিওগ্রাফি তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন রিমি রফিক, মুদ্রণ ও প্রকাশনায় সজীব হাসান, রিফাত।
সাজসরঞ্জম রিয়াজ, কাশেম। শব্দ সংযোজনায় শাকিল আহমেদ ও মাসউদ। হল ব্যাবস্থাপনায় নাহিদ, তুলি, মাফিন, ইলমা ও হ্যাপি। সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন বিভাগের চেয়ারম্যান জুবায়ের আল আহমেদ ও শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা নেপথ্যে রয়েছেন।
নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক মাসউদ আহমেদ বলেন, ইংরেজি বিভাগের প্রথম পূর্নাঙ্গ প্রযোজনায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ার রচিত “এ মিডসামার নাইট’স ড্রিম” এই নাটক নির্মানের ক্ষেত্রে ক্লাসিকের গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে সমসাময়িক বিষয়কে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। “কমেডি” খুব সহজভাবে হাস্যরসের মধ্য দিয়ে জীবনের অসঙ্গতিগুলোকে সমাজের সামনে প্রকাশ করে।
নাটকের কল্পকাহিনির মূল বিষয় হলো হাস্যরস এবং প্রেম। প্রেম যেন একটি শৃঙ্খলাবিহীন হাস্যকর বিষয়। প্রেমে পরা মানুষ অতি সহজেই জীবনের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে পরিনত হয়।
তিনি আরো বলেন, এই নাটকের প্রতিটি চরিত্রই যেন স্বপ্নের ঘোরের মাঝে বসবাস করে। এ যেন জগৎ নয়, দর্শন করা কোনো পরী রাজ্যের বিচরণ। বটমের ভাষায়- ‘Love and reason can’t live together’ অর্থ্যাৎ প্রেম আর যুক্তির সহাবস্থানের ক্ষেত্রে যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় এই নাটকে তার উত্তর খোজার চেষ্টা করেছে কলাকুশলীবৃন্দ। এই সংকটময় জটিল জীবনে প্রেমের জটিলতা যে হাস্যরস তৈরী করে তা দর্শক মনকে প্রফুল্ল করেছে এই আশাবাদ ব্যাক্ত করছি।