ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার ‘ট্রান্সজেন্ডার’ কোটায় কেবল জন্মগত কারণে লিঙ্গ বৈচিত্রের অধিকারীরা ভর্তি হতে পারবেন। যারা যারা স্বেচ্ছায় নিজেদের লিঙ্গ রূপান্তরিত করবে তাদের কোটা ব্যবহার করে ভর্তির সুযোগ থাকবে না। একই সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তির জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদত্ত হিজড়া পরিচয়পত্র অবশ্যই দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ২১/১২/২০২৩ তারিখের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তির বিষয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে ঢাবি কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে, ২০২২-২০২৩ সেশন থেকে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা প্রচলন করা হয়। কেবলমাত্র জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারী শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দ অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় ট্রান্সজেন্ডার শব্দ দ্বারা ‘হিজড়া’ সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
তাছাড়া, গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলসহ আরও তিন দফা দাবি তোলেন।
কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসন লিখিত নিশ্চয়তা এবং ট্রান্সজেন্ডার শব্দ বাতিল না করায় গতকাল (মঙ্গলবার) পুনরায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে বিকেল ৫টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে মিটিং করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার আগে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সন্ধ্যার পরে ‘গণ অবস্থান কর্মসূচি’ ঘোষণা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এই কর্মসূচি আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলমান থাকার কথা ছিল। এর মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।