The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশের ৬ গুলি, সেই তরুণ বেঁচে আছেন

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যখন সংঘর্ষ চলে ঠিক তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওতে দেখা যায় নির্মাণাধীন ভবনের রড ধরে ঝুলে আছেন এক তরুণ।

দূর থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায় লুকিয়ে থাকা ওই তরুণকে দুইজন পুলিশ এসে পরপর অন্তত ছয় রাউন্ড গুলি করেন। পরে পুলিশ চলে গেলেও সেই তরুণ সেখানেই ঝুঁলে ছিলেন। যে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় হয় নেট দুনিয়ায়।

সেদিন অনেকেই ধরে নিয়েছিল পুলিশের গুলিতে ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সেদিন পুলিশের ছয় রাউন্ড গুলি খেয়েও প্রাণে বেঁচে ফেরেন সেই তরুণ।

সেই তরুণের নাম আমির হোসেন (১৮)। গত ১৯ জুলাই কাজ থেকে ফেরার পথে সংঘর্ষের মুখে পড়েন আমির। আত্মরক্ষার্থে রামপুর থানার পাশের ওই নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নেন। এক পর্যায় ভবনে একটি রডের সঙ্গে ঝুলে থাকেন। সেই ভবনে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আমিরকে লক্ষ্য করে গুলি করেন অন্তত দুই জন পুলিশ সদস্য।

আমিরের দুই পায়ে মোট ছয়টি গুলি করেছে পুলিশ। গুলিগুলো এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এখন তাকে বিছানায় পড়ে থাকতে হচ্ছে।

ঘটনার বিষয়ে আমির বলেন, আমি আন্দোলনে যাই নি। আফতাব নগরের একটি কফি শপে কাজ করি। কাজ শেষে বাসা ফেরার পথে মেরাদিয়া আসার পরেই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যাই। তখন ওই ভবনের চার তলায় গিয়ে লুকাই। পুলিশ আমাকে দেখে ফেলায় রড ধরে ঝুলে থেকে পুলিশের চোখ এড়ানোর চেষ্টা করি। ওই অবস্থায় পুলিশ আমাকে নিচে লাফ দিতে বলে। লাফ না দেওয়ায় দুই পুলিশ আমাকে গুলি করতে থাকে। চার তলার ছাদ থেকে যে গুলিগুলো করেছে সেগুলো আমার শরীরে লাগে নি। পরে তিন তলা থেকে একজন পুলিশ এসে গুলি করতে থাকে। তার ছোড়া ছয় রাউন্ড গুলি আমার শরীরে লাগে। কিন্তু তার পরেও কিছু সময় ঝুঁলে ছিলাম। পরে পুলিশ চলে গেলে লাফ দিয়ে তিন তলায় গিয়ে পড়ি। সেখানেই কয়েক ঘণ্টা পড়েছিলাম। এরপর ফেমাস হাসপাতালের দুজন ডাক্তারসহ কয়েকজন লোক আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।’

সে দিন আমিরকে উদ্ধার করেছিলেন ঘটনাস্থলের পাশে থাকা ফেমাস স্পেশালাইজড হাসপাতালের দুজন চিকিৎসক ও রিসিপশনিস্ট মিমি।

নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরা আমির আরও বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, আমি আন্দোলনকারী না। পুলিশ বিশ্বাস করে নাই। তারা আমাকে চার তলা থেকে বারবার লাফ দিতে বলেছে। আমি লাফ না দেওয়ায় গুলি করে। তারা চাইছিল আমি যেন লাফ দিয়ে মারা যাই।’

আমিরের ফুফু নাসিমা বেগম বলেন, আমার ভাতিজা কোনো আন্দোলনে যায়নি। সে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ তাকে গুলি করেছে। মা মরা ছেলেটাকে গুলি করে পঙ্গু করে দিল। আমরা গরিব মানুষ। চিকিৎসাটাও ঠিক মতো করাতে পারছি না। যে পুলিশ অন্যায়ভাবে আমার ভাতিজাকে গুলি করেছে তাদের বিচার চাই। সরকারের কাছে দাবি জানাই তারা যেনো ছেলেটার চিকিৎসার খরচ চালায়।

সরকার আহত ব্যক্তিদের বিনা খরচে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তবে অনেকে আগেই নিজ খরচে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। এখন ওষুধ ও পথ্য কিনতে হচ্ছে। তারা কাজ করতে পারছেন না।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.