দেশের সব মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকদের এখন থেকে বাংলায় বার্তা ও নোটিফিকেশন পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ইতিমধ্যে বাংলায় বার্তা পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে সম্পূর্ণরূপে তা বাস্তবায়িত হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। অবশ্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জুনের মধ্যেই এ কাজ সম্পন্ন করার জন্য অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল রোববার রাজধানীর বিটিআরসি মিলনায়তনে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মুঠোফোনে বাংলায় বার্তা পাঠানো কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মোস্তাফা জব্বার। সে সময় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে বলা হয়, বাংলালিংক বাংলায় বার্তা পাঠানোর কাজ ৯৫ শতাংশ করেছে, গ্রামীণফোন ৯২ শতাংশ, টেলিটক ৮৯ ও রবি ৮৫ শতাংশ সম্পন্ন করেছে।
বার্তা শতভাগ বাংলায় পাঠানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। তারিখ, সংখ্যা, মুদ্রা, বিটিএস সাইটের অবস্থান, ফ্ল্যাগশিপ বা ব্র্যান্ডের নাম, টিভ্যাসের জন্য গ্রাহকের দ্বিতীয় সম্মতি (ইয়েস, ওয়াই), ভ্যাস সেবা চালু এবং বন্ধ করার কি–ওয়ার্ড, ফেসবুক, গুগল ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সেবার ওটিপি বার্তা ইংরেজিতে থাকবে। ভেন্ডর প্ল্যাটফর্ম থেকে পাঠানো বার্তা, টিভ্যাস, বিটুবি ইংরেজিতে থাকবে।
বিটিআরসির উপস্থাপনায় বলা হয়, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ৯১ শতাংশ বার্তা বাংলায় রূপান্তর করা সম্ভব হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে তা শতভাগ হবে। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আগামী জুনের মধ্য শতভাগ বার্তা ও নোটিফিকেশন গ্রাহকদের কাছে বাংলায় পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বাংলায় বার্তা বা নোটিফিকেশন রূপান্তরের পেছনের কাজগুলো চ্যালেঞ্জিং থাকা সত্ত্বেও তা করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলা ভাষা পিছিয়ে নেই। এমন কোনো ডিভাইস নেই, যেখানে বাংলা লেখা যাবে না।
দায়বদ্ধতা থেকেই প্রযুক্তিতে বাংলা ব্যবহারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রয়োগ অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, রবির ভারপ্রাপ্ত সিইও রিয়াজ রশিদ ও বাংলালিংকের ভারপ্রাপ্ত সিইও তৈমুর রহমান।