The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ৮ই নভেম্বর, ২০২৪

জীবনের কঠিন পরীক্ষায় ট্রাম্প: জিতলে হোয়াইট হাউস, হারলে কারাগার

ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য শুধুই একটি রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা নয়; বরং এটি একটি অগ্নিপরীক্ষা, যেখানে তার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে। জয়ী হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম অপরাধমূলক দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসে ইতিহাস রচনা করবেন। আর পরাজয় তাকে এনে দিতে পারে কারাগারের কড়া শিকল। প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে কি তিনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন, না কি আইনি জটিলতার পাহাড়ে চূর্ণ হয়ে যাবেন?

ঐতিহাসিক উত্তরণ না কি পতনের কিনারায়?

যদি ট্রাম্প নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তবে এটি হবে এক অভূতপূর্ব ঘটনা এক অপরাধমূলক দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি হোয়াইট হাউসের কর্তা হয়ে ফিরবেন। তবে পরাজয় হলে তার জন্য অপেক্ষা করছে আইনি ঝড়, যা তাকে কারাগারে নিয়ে যেতে পারে। ২০১৬-২০২০ সালের তার প্রেসিডেন্ট পদে থাকা অবস্থায় দুবার অভিশংসনের সম্মুখীন হন তিনি। প্রথমবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক চাপ প্রয়োগের অভিযোগে, দ্বিতীয়বার ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলায় উসকানির দায়ে।

পলাতক নায়ক না কি নতুন দণ্ডের সম্মুখীন?

ট্রাম্পের জীবনীকার গয়েন্ডা ব্লেয়ার এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, ট্রাম্প নিজেকে এমন একজন হিসেবে গড়ে তুলেছেন যিনি সব প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তি পান। কিন্তু এবার তার জন্য পরিস্থিতি ভিন্ন। ব্লেয়ারের কথায়, ‘এবার তার সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন পরিণতি। কারাবাস থেকে শুরু করে সম্পদ হারানোর শঙ্কা। এমনকি জয় বা পরাজয় যাই হোক না কেন, তাকে শারীরিক এবং মানসিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।’

নির্বাচনে জিতলে ট্রাম্পের প্রথম পদক্ষেপ হবে বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করা, যিনি তার বিরুদ্ধে দুইটি গুরুতর ফেডারেল মামলার তত্ত্বাবধান করছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি মামলা চলছে, যা তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের পথে বিশাল চ্যালেঞ্জ।

ট্রাম্পের প্রধান আইনি চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য প্রভাব

স্টর্মি ড্যানিয়েলসের ‘হাশ মানি’ মামলা : ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ‘হাশ মানি’ (‘হাশ মানি’ এমন একটি টাকা, যা কাউকে দেওয়া হয় কোনো গোপনীয় বা অপ্রীতিকর তথ্য প্রকাশ না করার বিনিময়ে) প্রদানের জন্য ব্যবসায়িক জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ২৬ নভেম্বর তার দণ্ডাদেশ ঘোষণা হবে। নির্বাচনে জয় পেলে তার আপিলের পথ উন্মুক্ত হতে পারে।

জাতীয় নির্বাচন হস্তক্ষেপ মামলা : ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। জয়ী হলে এই মামলা খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

জর্জিয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ মামলা : জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টিতে নির্বাচনী প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত। পরাজিত হলে তার বিচারের তারিখ নির্ধারণ হতে পারে, কিন্তু জয় পেলে এই মামলায় বিলম্ব ঘটতে পারে।

গোপন নথিসংক্রান্ত মামলা: প্রেসিডেন্সির শেষে গোপনীয় নথি সংরক্ষণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান। নির্বাচনে জয়ী হলে বিশেষ কৌঁসুলির অফিস বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও মামলা থেকে ট্রাম্পের মুক্তি নিশ্চিত নয়।

আইন অনুযায়ী, দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন, তবে নির্বাচিত হলেও তার ক্ষমতা সীমিত হতে পারে। ২৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে তাকে অক্ষম প্রমাণ করে ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতে পারে। এছাড়া, নির্বাচনে জয় তার অনেক মামলা খারিজের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে, তবে সব আইনি ঝামেলা থেকে ট্রাম্পের মুক্তি পাওয়া অনিশ্চিত।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সংগ্রাম হতে চলেছে এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। একদিকে প্রেসিডেন্সির মুকুট, অন্যদিকে কারাগারের শেকল—এই দ্বন্দ্বে কে জিতবে? সময়ই তা বলে দেবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.