করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়েই ফল প্রকাশ করা হয়। এতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে রেকর্ডের সৃষ্টি হয়। ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মাত্র ৩টি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার জিপিএ-৫ পাওয়ার গতবারের রেকর্ডও ভেঙে যায়। দুই পরীক্ষা মিলে বিজ্ঞানের প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন মাত্র ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬১৪ জন। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ জন। ২০২১ সালে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন। এদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। আর দেশের ৮টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন ৩৫ হাজার। যদিও প্রাথমিকভাবে সবাইকে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে বাছাই করা হয় জিপিএর মাধ্যমেই। ফলে জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ মেলে না। এই অবস্থায় কৃষি গুচ্ছে সিলেকশন বাতিল অথবা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা।
কৃষি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, তারা তাদের আওতাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাইরে পরীক্ষার কেন্দ্র করতে চান না। সেজন্য প্রতিবছর মোট আসন সংখ্যার ১০ গুন শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেন। এবারও সেই পথেই হাটবেন তারা। তবে নতুন করে একটি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত হওয়ায় এবার আসন সংখ্যা সামান্য বাড়ানো হতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
ভর্তিচ্ছুরা বলছেন, কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষায় মাত্র ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। যা মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্তির তুলনায় খুবই নগন্য। কৃষি গুচ্ছ কর্তৃপক্ষ বুয়েটের মতো প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা নিতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই শিক্ষার্থী বাছাই করা যেত। তবে কেবলমাত্র জিপিএ’র ভিত্তিতে প্রাথমিক বাছাই করায় যাদের বিষয়ভিত্তিক জিপিএ ভালো তারাই পরীক্ষার সুযোগ পাবে। এতে দুই লাখের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণই করতে পারবে না।
নাজমিন সিদ্দিকা নামে এক শিক্ষার্থী জানান, গত বছর এবং এ বছর মিলিয়ে বিজ্ঞানের আড়াই লাখের বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয় মাত্র ৩৫ হাজারকে পরীক্ষা দিতে দিচ্ছে কৃষি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এটা অন্যায়। ৮ টা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণক্ষমতা আরো বেশি। হয় সিলেকশন বাড়াতে হবে না হয় সবাইকে পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
হৃদয় আলম নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বুয়েটের মতো প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করতে পারে। যারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারাই পরবর্তীতে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। আমরা পরীক্ষার সুযোগ চাই। এটি আমাদের অধিকার। আমাদের অধিকার ফিরে পেতে প্রয়োজনে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
সার্বিক বিষয়ে জানতে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আহবায়ক ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।