The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে ‘অবাঞ্ছিত’ লিটন, আসেনি বিদ্রোহীরা

জাবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি চালু করার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অবাঞ্ছিত সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন অংশ নিয়েছেন। ফলে কর্মসূচিতে বিদ্রোহী ছয়টি হলের নেতাকর্মীরা অংশ নেননি।

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

মানববন্ধনে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু করার পাশাপাশি বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বির আবাসিক হলে সিট ফিরিয়ে দেওয়াসহ নানা দাবি জানান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মানবন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘বুয়েটে উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী, জামায়াত ও শিবিরের বৃহৎ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই অপরাজনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। কারণ বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে পাকিস্তানি পক্ষের শক্তি কায়েম করতে সুবিধা হবে। তবে তাদের এই অসৎ উদ্দেশ্য রুখে দিতে হবে। সবশেষে বলতে চাই, দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতার বিপক্ষের দোসররা ঠাঁই পাবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরব অংশগ্রহণ ছিলো। সেই বুয়েট ক্যাম্পাসে মৌলবাদী জামায়াত-শিবিরের অপরাজনীতির প্ররোচনায় ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে মৌলবাদীরা বুয়েট ক্যাম্পাসে আশ্রয় নিয়েছে। অথচ সেই হত্যাকান্ড তদন্ত করে জড়িতদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘কিছুদিন আগে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে বুয়েটের কিছু জঙ্গী ও মৌলবাদী শিক্ষার্থী পুলিশের হাতে আটক হয়। তারা জামিনে বের হয়ে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। অথচ তাদের নিয়ে বুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমরা বিশ্বাস করি, বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতার পক্ষে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠা নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির পক্ষে।’

এর আগে, গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি চালু ও শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বির আবাসিক হলে সিট ফিরিয়ে দেওয়াসহ নানা দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এদিকে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অবাঞ্ছিত সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন অংশ নেওয়ায় কর্মসূচিতে বিদ্রোহী ছয়টি হলের নেতাকর্মীরা অংশ নেননি। তাদের দাবি, অবাঞ্ছিত সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটনের সঙ্গে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিবেন না তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুব বলেন, ‘কর্মসূচিতে আমাদের ছয় হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কেউ ছিলো না। মূলত অবাঞ্ছিত ঘোষিত সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটনকে মেনে রাজনীতি করার বিষয়টি আমাদের কর্মীরা মানতে পারছে না। তাই তারা লিটনের উপস্থিতিতে কর্মসূচিতে আসতে রাজি হয়নি।’

এর আগে, গত ২৩ জানুয়ারি জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিটনের বিরুদ্ধে জমি দখলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছয় হলের অনুসারীরা। হলগুলো হলো– মীর মশাররফ হোসেন হল, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল, শহীদ সালাম-বরকত হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ও আল-বেরুনী হল। পরে লিটনের বহিষ্কার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, কালো পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচিও পালন করেন তারা।

এদিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পর থেকে ক্যাম্পাসের রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন লিটন। এসব ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের ২১ দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরপর একমাস পার হলেও আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন।

অন্যদিকে গত শনিবার (৩০ মার্চ) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এই মতবিনিময় সভায় জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিটনকে ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিলো। তবে সভায় বিদ্রোহীদের মধ্যে মাত্র দু’জনের বক্তব্য শুনে তাদের অভিযোগ তোয়াক্কা না করে লিটনকে স্বপদে বহাল রাখার ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। পাশাপাশি কোনো নেতাকর্মী লিটনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে তাকে বহিস্কার এবং রাষ্ট্রীয় বিশেষ সংস্থা দিয়ে হেনস্থা করার হামকি দেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.