জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ( জাবি) বটতলার নুরজাহান হোটেলের বিরুদ্ধে উচ্চ মূল্যে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে দেয়া মূল্য তালিকারও তোয়াক্কা করছেন না এ দোকানের মালিকপক্ষ।
বেশি মুনাফার লোভে কয়েকদিনের বাসি ভর্তা সহ নানা ধরণের পচা ও বাসি খাবার বিক্রি করছেন তারা প্রতিনিয়ত। সরেজমিনে দেখা যায়, রাত ১০ টার পর অবিক্রিত বিভিন্ন রকম ভর্তা-ভাজি রান্না ঘরের নোংরা মেঝোতে নামিয়ে রাখা হয়। আগের দিনের বেঁচে যাওয়া অংশের সাথে নতুন করে যোগ করে পরদিন আবার বিক্রি করা হচ্ছে। মেঝোতে নামিয়ে রাখা খাবারের ওপর তেলাপোকা, মশা, মাছিসহ নানা ধরণের কীটপতঙ্গ ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। দোকানদারের এমন দায়িত্বহীনতা নিয়ে চিন্তিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে,পবিত্র রমজান মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হল গুলোর ডাইনিং বন্ধ রয়েছে এবং ক্যান্টিনের খাবারের মান নিম্নমানের হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসার জায়গা বটতলাস্থ খাবারের দোকানগুলো। এরমধ্যে সেহেরিতে নুরজাহান নামের এই হোটেলটি শুধুমাত্র খোলা রাখা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো রাখা হচ্ছে খাবারের দাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হিরণ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, নুরজাহান হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া খাবারের মূল্য তালিকা থেকে বেশি দাম রাখা হচ্ছে। মূল্য তালিকায় রুই মাছের দাম ৪৫ টাকা লিখা থাকলেও রুই মাছের খন্ডের অর্ধাংশের দাম রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা করে। দাম বেশি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন অযুহাত দেখাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের রিফাত তালুকদার বলেন, তালিকা অনুযায়ী কোন খাবারের দাম তারা রাখেন না। দাম নিয়ে দোকানদারদের সাথে প্রায়ই বাকবিতন্ডায় হলেও কোনো লাভ হয়না!
এছাড়াও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে এই হোটেলে বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিভিন্ন লেখালেখিও করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের ফেসবুকে না দিয়ে সরাসরি প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া উচিত। তখন লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ওই দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো। তারপরও আমরা নুরজাহান হোটেলের মালিক পক্ষের সাথে কথা বলবো।
আমরা রমজান মাসে বড় কোনো অভিযান পরিচালনা করতে পারছি না কারণ সেহরির সময় মাত্র কয়েকটি দোকান খোলা থাকে। এখন এই দোকানটিও বন্ধ করে দিলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট আরো বেশি হবে। তবে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইদের পরে একটি অভিযান পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।