হার্ভার্ড যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের একটি গবেষণাধর্মী প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। ১৬৩৬ সালে ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। হার্ভার্ড বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রের সেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের তিন শিক্ষার্থী। যথাক্রমে রুম্পা সরকার, মো. শরীফ হোসেন ও রেজাউল করিম রিপন। বিষয়টি শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তারা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
রুম্পা সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের ও মো. শরীফ হোসেন ৪৪তম ব্যাচের এবং রেজাউল করিম রিপন ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। জাবিতে পড়াশোনার পাশাপাশি তারা তিনি জনেই গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদের একাধিক গবেষণাপত্র বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথে রুম্পা ও শরীফ এপিডেমিওলজিতে এবং রিপন এনভায়রনমেন্টাল হেলথে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে জানা যায়।
অনুভূতি প্রকাশ করে রুম্পা সরকার বলেন, অনেকের মতো আমারও বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন ছিল। অবশেষে তা পূরণ হচ্ছে। এটা সত্যিই আনন্দের। হার্ভার্ডে চান্স পাওয়ার আগে আমি জনস হপকিন্স, ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনা ও ইউনিভার্সিটি অফ পিটসবার্গ থেকে অফার লেটার পেয়েছি। এর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনা ও ইউনিভার্সিটি অফ পিটসবার্গ থেকে পিএইচডিতে ফুল ফান্ড স্কলারশিপ পেয়েছি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে আমার ৫টি গবেষণাপত্র প্রকাশ পেয়েছে।
শরীফ হোসেন অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হওয়ার পর স্বপ্ন দেখতাম, উচ্চশিক্ষার জন্য ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করব। অনার্সের ৩য় বর্ষে সেই স্বপ্নটা ধীরে ধীরে প্রবল হতে থাকে। তখন থেকেই আন্তর্জাতিক এবং সরকারি কিছু গবেষণা প্রজেক্টে কাজ শুরু করি এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করি। অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রেও ভালো ফলাফল করার জন্য চেষ্টা করেছি। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছি। হার্ভার্ডে চান্স পাওয়ার আগে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও অফার লেটার পেয়েছি।
রেজাউল করিম রিপন অনুভূতি জানিয়ে বলেন, অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই আমি চান্স পেয়েছি। কারণ আমার চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা চলমান, তাই স্নাতকের ফলাফল ছাড়াই আমি এখানে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। যা সত্যিই আনন্দের। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছি। বর্তমানে আমি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক একটি সংস্থায় এডুকেটর হিসেবে কাজ করছি। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে আমার ২০-এর অধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহীদে বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চান্স পাওয়ার জন্য কী কী করণীয়? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তার বলেন, এ বিষয়টি একটি প্যাকেজের মতো কাজ করে। এক্ষেত্রে কারো অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট মোটামুটি হলে তাকে গবেষণাপত্রে ভালো হতে হয়। আবার জিআরই, টোফেলও অনেক সময় সাহায্য করে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চান্স পেতে। আবার অনেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বা দেশীয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবক বা রিসার্চ অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে কাজ করে। এ বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ সবদিকে সামঞ্জস্য রেখে সিভিটাকে একটি কমপ্লিট প্যাকেজ হিসেবে তৈরি করতে হবে। তাহেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সফলতায় উচ্ছ্বসিত জাবির পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজা মোবারক বলেন, তাদের এ সফলতা আমাদের জন্য গৌরবের। তারা বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাবে, এটা দেশের জন্য, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বড় অর্জন।