The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ২৯শে জানুয়ারি, ২০২৫

জাবিতে ২২ তম পাখিমেলা অনুষ্ঠিত

জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ২২ তম পাখি মেলা-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধি প্রতি বছর এ মেলার আয়োজন করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানিবিদ্যা বিভাগ।

আজ শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে সামনে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. এ টি এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাখিমেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান। তিনটি বলেন, গত দু-তিন বছর ক্যম্পাসে পাখি কম আসছে। এর প্রধান কারণ হলো জলাশয়ের পাড়ে জনসমাগম। মানুষের ভিড়ে পাখিরা বিরক্ত হয়। ফলে তারা সেখানে বসতে আগ্রহ দেখায় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘গত কয়েক বছর আগেও আমরা যে জলাশয়গুলোতে পাখি দেখতাম এখন আর সেখানে পাখি দেখতে পাচ্ছি না। কারণ বহিরাগত দর্শনার্থীরা পাখিদের উত্ত্যক্ত করে ফলে তারা চলে যায়। এখন শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের জলাশয়ে পাখি রয়েছে। কারণ সেখানে পাখিদের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। সেখানে আমরা সর্বসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রেখেছি। আমরা চেষ্টা ক্যাম্পাসের সবগুলো জলাশয়ে এরকম পাখিদের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা। এজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির বসবাস উপযোগী পরিবেশ ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্যাপক জনসমাগম রোধ করা সম্ভব হলে পাখির অভয়ারণ্য আরও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ জন্য কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পাখির অভয়ারণ্য নিশ্চিত করার স্বার্থে আরোপিত বিধি- নিষেধ মানতে হবে। ক্যাম্পাসের প্রকৃতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে শুক্র ও শনিবার বিভিন্ন ব্যাচ ও সংগঠনের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে। এতদসত্ত্বেও ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে। ব্যাপক জনসমাগম রোধ করা সম্ভব হলে পাখির অভয়ারণ্য আরও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে প্রকৃতি ও পরিবেশ ঠিক রাখতে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। পাখিমেলা আয়োজনের প্রশংসা করে উপাচার্য তাঁর ভাষণে বলেন, পাখিমেলা পাখিকে ভালোবাসতে উৎসাহিত করে। পাখির প্রতি ভালোবাসা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। পাখির প্রতি সকলকে দায়িত্বশীল ও যত্নবান হতে হবে।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মোঃ মনজুরুল হক, বিশিষ্ট পাখি বিশারদ ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান।

এছাড়াও পাখিমেলায় বিগ বার্ড প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের সম্মাননা, গণমাধ্যমে পাখি বিষয়ক সেরা প্রতিবেদন এবং পাখি বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন পুরস্কার প্রদান করা হয়।দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত পাখিমেলায় ছোটদের পাখি বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ, বই-পোস্টার প্রদর্শনী, সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, পাখি দেখা, পাখি চেনার প্রতিযোগিতা এবং পাখি বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালে প্রথম পাখি মেলা শুরু করেছিল ‘বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব’। ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সরাসরি সম্পৃক্ত হয়। ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলো লিজ দেওয়ার কারণে পাখি না বসায় এবং ২০২১ সালে করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এ বছর ২২তম পাখি মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.