জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধ্যয়নরত শেরপুর জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’র ‘সংবর্ধনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৯জুন) বিকেল সাড়ে ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে এই সংবর্ধনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় অনুষ্ঠানে নবীনদের বরণ করে নেয়া হয়, শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, শেরপুরের মানুষের সাথে কিছুক্ষণ কথা বললেই নির্দিষ্ট শব্দ শুনেই বোঝা যায় মানুষটি শেরপুরের। শৈশব-কৈশোরের দুরন্ত সময় কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করলেও শেরপুরবাসীর সাথে এই আত্মিক সম্পর্ক আজীবন রয়ে যায়।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্মৃতিচারণ করে আরো বলেন, আমার পরিবার চিরকুটে একটি ঠিকানা লিখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পাঠিয়েছিলেন। ঠিকানাটি ছিল আল বেরুনি হলের নির্দিষ্ট একটি কক্ষ আর একজন ব্যক্তির নাম। মানুষটিকে আগে থেকে চিনতামও না। ৯০ এর ঘটনা, রাস্তাঘাট কেবল তৈরি হচ্ছে। সেসময় এসে আল বেরুনি হলের সেই ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ হল, সেখানেই থাকলাম। তার সর্বাত্মক সহযোগিতায় ভর্তি হয়ে গেলাম বাংলা বিভাগে। সেই ভাইটি ছিল শেরপুরের।
এসময় তিনি শেরপুর জেলার শিক্ষার্থীদের একতাবদ্ধ থাকতে উদ্বুদ্ধ করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ বলেন, আমি কক্সবাজারের ইউএনও থাকা অবস্থায় লক্ষ্য করেছি, শেরপুর জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দুই একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কোনো এনজিও তেমনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে না, যেমনটা দেশের অন্যান্য জায়গায় হয়ে। আমাদের ছোট্ট জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে, আমাদেরকে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখার অবারিত সুযোগ আছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে শেরপুরে দুঃস্থ মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে ‘নৃ ফাউন্ডেশন’ গড়েছি। নৃ মানে যে ‘মানুষ’ এই ধারণাটি এসেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে৷ এজন্য বলা যায় শেরপুর এবং জাহাঙ্গীরনগর আমার জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আই আইটি) ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. তারেকুল ইসলাম তারেক এর
সভাপতিত্বে এবং আইন ও বিচার বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবির হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাবি স্কুল এন্ড কলেজের লেকচারার সাইফুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন, ছাত্রকল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি আ.স.ম. ইমাম মেহেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিহাব ফেরদৌস জয়।
সংবর্ধনা শেষে শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির ১০০ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসানকে সভাপতি এবং একই ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মাশুকুর রহমান ফাহিমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়৷
সদ্যবিদায়ী সভাপতি তারেকুল ইসলাম তারেক ও সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া ইসলাম সূচনা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এসময় অন্যান্যর মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শেরপুর জেলার শিক্ষার্থীরা।