The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪

জাবিতে শারাীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও শারীরিক লাঞ্ছনার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী এবং এর কিছুক্ষণ পরেই প্রক্টর বরাবর পাল্টা অভিযোগ করেন সেই ছাত্রলীগ নেতা।

দুজনের অভিযোগসূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পৌনে সাতটা – সাড়ে সাতটার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন মাঠে ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফেরদৌস হাওলাদার। তার অভিযোগপত্রে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাসহ অজ্ঞাত আরও ২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক শেখ শাহরিয়ার পারভেজ শাওন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ফেরদৌস হাওলাদার তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন “২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন মাঠ থেকে ফেরার পথে হঠাৎ একটি মটর সাইকেলে আসা তিনজন শিক্ষার্থী আমাকে গতিরোধ করে এবং এলো পাথারি চর-থাপ্পড় মারতে থাকে। এক পর্যায়ে মেরে স্থান ত্যাগ করার সময় তাদের বাইকের গতিরোধ করে পরিচয় জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকৃতি জানায় এবং একপর্যায়ে মূল হামলাকারী শেখ শাহরিয়ার পারভেজ শাওন তার পরিচয় দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। আমার মনে হয়, শারীরিক নির্যাতনটি ছিলো ছিনতাইয়ের প্রাথমিক মহড়া। কারন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে মারার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি এবং তরিঘড়ি করে স্থান ত্যাগ করে। ”

এরই পরিপ্রেক্ষিতে দর্শন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শেখ শাহরিয়ার পারভেজ শাওন প্রক্টর বরাবর তার অভিযোগপত্রটি জমা দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন “গতকাল আনুমানিক ৫:৪৫ মিনিটে বাইক যোগে নবীনগর যাওয়ার পথে নূর মোহাম্মদ প্রিন্স (কৌশল-৪৫), মোস্তফা রাফিদ (দর্শন-৪৭) সাথে থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের সামনের রাস্তায় সাংবাদিকতা ও গনমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস হাওলাদারের গায়ে ধূলা লাগে বলে আমাকে সে গালি-গালাজ করে এবং সে সময়ে ঢাকা – পাইকগাছাগামী বাসে দুলাভাই থাকায় নবীনগর স্টপেজে চলে যাই পরবর্তীতে সেখান থেকে ফেরার পথে আনুমানিক ৬.৪০ এর দিকে সে পরিচয় জানতে চায় ও বহিরাগত ভেবে গালিগালাজ করে ও একটা ঘুষি মারে। পরে পরিচয়ে জুনিয়র জানতে পেরে তাকে হলে আসতে বললে সে তার বন্ধুদের দিয়ে মারবে বলে ফোন দেয়,পরে আমি দ্রুত চলে আসি। পরে গতকাল রাত ৩:৪০ দিকে বাইরে খেতে আসার সময় অন্ধকারে ৪-৫ জন আমার উপর হামলা করে যার ক্ষত পিঠে আছে এবং যাদের কাউকেই আমি চিনি না।”

এ ব্যাপারে দুইজনের সাথেই মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা যায়নি।

ফেরদৌস হাওলাদারের দেয়া অভিযোগের পর এ বিষয়টি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন,ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত না। কারও অপরাধের দায় সংগঠন নিবে না।এধরনের ঘটনায় যদি ছাত্রলীগের কোন কর্মী যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা জিরো-টলারেন্স নীতি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘তাদের অভিযোগপত্র পেয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. জাবিতে শারাীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

জাবিতে শারাীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও শারীরিক লাঞ্ছনার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী এবং এর কিছুক্ষণ পরেই প্রক্টর বরাবর পাল্টা অভিযোগ করেন সেই ছাত্রলীগ নেতা।

দুজনের অভিযোগসূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পৌনে সাতটা - সাড়ে সাতটার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন মাঠে ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফেরদৌস হাওলাদার। তার অভিযোগপত্রে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাসহ অজ্ঞাত আরও ২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক শেখ শাহরিয়ার পারভেজ শাওন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ফেরদৌস হাওলাদার তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন “২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন মাঠ থেকে ফেরার পথে হঠাৎ একটি মটর সাইকেলে আসা তিনজন শিক্ষার্থী আমাকে গতিরোধ করে এবং এলো পাথারি চর-থাপ্পড় মারতে থাকে। এক পর্যায়ে মেরে স্থান ত্যাগ করার সময় তাদের বাইকের গতিরোধ করে পরিচয় জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকৃতি জানায় এবং একপর্যায়ে মূল হামলাকারী শেখ শাহরিয়ার পারভেজ শাওন তার পরিচয় দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। আমার মনে হয়, শারীরিক নির্যাতনটি ছিলো ছিনতাইয়ের প্রাথমিক মহড়া। কারন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে মারার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি এবং তরিঘড়ি করে স্থান ত্যাগ করে। ”

এরই পরিপ্রেক্ষিতে দর্শন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শেখ শাহরিয়ার পারভেজ শাওন প্রক্টর বরাবর তার অভিযোগপত্রটি জমা দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন “গতকাল আনুমানিক ৫:৪৫ মিনিটে বাইক যোগে নবীনগর যাওয়ার পথে নূর মোহাম্মদ প্রিন্স (কৌশল-৪৫), মোস্তফা রাফিদ (দর্শন-৪৭) সাথে থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের সামনের রাস্তায় সাংবাদিকতা ও গনমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস হাওলাদারের গায়ে ধূলা লাগে বলে আমাকে সে গালি-গালাজ করে এবং সে সময়ে ঢাকা - পাইকগাছাগামী বাসে দুলাভাই থাকায় নবীনগর স্টপেজে চলে যাই পরবর্তীতে সেখান থেকে ফেরার পথে আনুমানিক ৬.৪০ এর দিকে সে পরিচয় জানতে চায় ও বহিরাগত ভেবে গালিগালাজ করে ও একটা ঘুষি মারে। পরে পরিচয়ে জুনিয়র জানতে পেরে তাকে হলে আসতে বললে সে তার বন্ধুদের দিয়ে মারবে বলে ফোন দেয়,পরে আমি দ্রুত চলে আসি। পরে গতকাল রাত ৩:৪০ দিকে বাইরে খেতে আসার সময় অন্ধকারে ৪-৫ জন আমার উপর হামলা করে যার ক্ষত পিঠে আছে এবং যাদের কাউকেই আমি চিনি না।”

এ ব্যাপারে দুইজনের সাথেই মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা যায়নি।

ফেরদৌস হাওলাদারের দেয়া অভিযোগের পর এ বিষয়টি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন,ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত না। কারও অপরাধের দায় সংগঠন নিবে না।এধরনের ঘটনায় যদি ছাত্রলীগের কোন কর্মী যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা জিরো-টলারেন্স নীতি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, 'তাদের অভিযোগপত্র পেয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন