জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউট এর দ্বিতীয় বর্ষের (৫১ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের (৫২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের পুকুর পাড়ে ডেকে নিয়ে র্যাগিং এর অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাব সংলগ্ন পুকুর (ভিসি পুকুর) পাড়ে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক ইন্সটিটিউটের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে র্যাগিং দেন ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাদের ছেড়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ আবু সৈয়দ ও এ.এস.এম রাশিদুল হাসান।
ঘটনাস্থলে ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে এক জায়গায় জমা রেখে তাদের সঙ্গে অসদাচার করেন ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত ৫১ ব্যাচের শরিফুল ইসলাম সরল, বাঁধন বিশ্বাস, মেহেদী হাসান (আবির), শিপন বিশ্বাস, মাসুম বিল্লাহ, দীপন রয়, জানিব হাসান মাটিয়া, সাজিয়া জাহান সিজা এবং সাদনান নিদ্রা উপস্থিত ছিলেন এবং ৫২ ব্যাচের তানভীর, সায়েম, শুভজিৎ, স্বপন, রনি, রিফাত, শামীম, জুবায়ের, শেনন ও আরিফ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী বলেন, র্যাগিংয়ের তথ্য পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হই। এরপর ৫১ ও ৫২ ব্যাচকে আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং সকলের নামগুলো সংগ্রহ করি। তাদের কাছ থেকে জানতে পারি ক্রিকেট খেলার বিষয়ে কথা বলার জন্য ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের ওখানে ডেকে নিয়ে গেছে। সেখানে ৫২ ব্যাচের সকলের মোবাইল ফোন গুলো তারা আলাদা করে একত্র করে রেখেছিল। কিন্তু এরকম জায়গায় ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং সবার মোবাইলগুলো জমা নেয়ার পেছনে নিশ্চয়ই অন্য উদ্দেশ্য ছিলো।
র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শিপন বিশ্বাস বলেন, আমাদের ব্যাচের মেয়েরাও ছিলো আমাদের সাথে। আসলে র্যাগিংয়ের কোনো বিষয় ছিলো না সেখানে। দিনের বেলায় এভাবে র্যাগ দেয়া যায় নাকি? আগামীকাল থেকে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধের পরে আমাদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচ আছে। সে বিষয়ে কথা বলার জন্যই ৫২ ব্যাচকে ডাকা হয়েছিল।
ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচ নিয়ে কথা বলার জন্য এরকম জায়গায় কেন জুনিয়রদের নিয়ে যাওয়া হলো সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত জনকে নিয়ে রোদের মধ্যে তো কথা বলা যায় না। তাই পুকুর পাড়ের ওইদিকে ছায়ায় আমরা বসেছিলাম।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মনির উদ্দিন শিকদার বলেন, এ বিষয়ে সিন্ডিকেটে একাধিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রশাসন সবসময় র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। এ কারণে তুলনামূলকভাবে র্যাগিং কমেছে। তারপরও বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আজকে আমরা শোনামাত্রই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করার চেষ্টা করেছি। আমরা ঘটনাস্থলে কয়েকজনকে পেয়েছি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করা হবে।
বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, অপরাধ অপরাধীই। কেউ যদি অপরাধ করে থাকলে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে। সে আমার ছাত্র হোক বা যে-ই হোক না কেনো। তাদেরকে তো আমি শাস্তি দিবোই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেনো শাস্তির আওতায় আনে সেই ব্যবস্থাও করবো।