জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে ৫২ তম ব্যাচের নবীন এক শিক্ষার্থীকে হেনস্থা ও হল থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২ তম ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবিদুল ইসলাম।
এ ঘটনায় আবিদুল অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন ইংরেজি বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ মুহাম্মদ মুয়াজ।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল রাতে আবিদুল হলের বাইরে থাকায় তাকে হলে উপস্থিত হতে বলা হয়।রাত দেড়টার দিকে সে উপস্থিত হলে ৫১ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা তাকে নানাভাবে হেনস্থা করে ও মানসিকভাবে নিপীড়ন করে। এরপর তাকে জোরপূর্বক পরিচিত হবার চেষ্টা করে এবং তাদের আচরণে সাড়া না দিলে একপর্যায়ে তাকে রুমে যেতে বলা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এরপর সে রুমে চলে গেলে তার রুমমেটরা ফিরে আসে এবং তাদের সাথে থাকার জন্য আসে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী রুবাই হোসেন ।পরবর্তীতে আবিদুল ওয়াশরুমে যায় এবং নির্ধারিত স্থানে এসে শুয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পর ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ফোনে ভিডিও ক্যামেরা চালু করে কক্ষে প্রবেশ করে এবং জিজ্ঞেস করে ’তোর রুমের সামনে এত গন্ধ কেন?তুই নেশা করিস?’ তোর রুমমেটরা নাকি তোর নেশার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে?’ এসময় তার জিনিসপত্র তল্লাশি করতে শুরু করে এবং ভিডিও ধারণ করতে থাকে। এভাবে তারা কিছু ট্যাবলেট আর একটি প্লাস্টিকের বোতল পায়, এরপর তারা ভিডিও দেখিয়ে বলে আমি নাকি মাদকসেবন করি।
এতে আরও বলা হয়, ’ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলতে থাকে সে মাদক সেবন করে না কিন্তু অভিযুক্তরা কোন কথা না শুনেই তার জিনিসপত্র হল গেইটে রেখে আসে এবং তাকে হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। এরপর আবিদুল আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং উপায় না পেয়ে হল ত্যাগ করে। ভুক্তভোগী সন্দেহ করে সে ওয়াশরুমে থাকাকালীন সময়েই তার জিনিস পত্রের মধ্যে মাদকদ্রব্য রাখা হয়।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবিদুল ইসলাম বলেন, ’সেদিনের ঘটনার পর এখনো আমি আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করছি।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ মুহাম্মদ মুয়াজ বলেন, আমি কাউকে হেনস্তা করিনি। বাইরে শোরগোল দেখে রুম থেকে বের হই, দেখি কয়েকজন শিক্ষার্থী হল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে আমি বরং তাদের হলে ফেরাতে চেষ্টা করি। হলে সবাইকে আমাকে চিনে তাই ঐ শিক্ষার্থী তাই আমার নাম বলেছে। সিসি ক্যামেরা চেক করে যদি ওখানে আমার সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে আমাকে হেনস্তাকারী বলতে পারেন। কিন্তু আমি ওখানে ছিলাম। ৫২ ব্যাচের হলে সবাই আমার ছোট। তাদের সাথে আমার সম্পর্ক ভালো। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। হল প্রভোস্ট স্যারও আমাকে ডেকে বলেছেন তার সাথে যেন খারাপ ব্যবহার না হয়। আমি আমার ব্যাচের সবাইকে বলেছি তার সাথে যেন ভালো আচরণ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সাব্বির আলম বলেন, ’আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে।এ ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তরা দোষী প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’