জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ মার্চ) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুপুর ১২টায় তাদের অবরোধ কর্মসূচি চলছে।
মঞ্চের সংগঠক অধ্যাপক পারভীন জলী রোববার রাতে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এর পর সোমবার সকালে প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার সবগুলো গেইটে তালা লাগিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা।
এছাড়া নিপীড়কদের ‘সহায়তাকারী’ প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করা এবং তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে, জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও রয়েছে আন্দোলনকারীদের।
এদিকে অবরোধ চলাকালে নতুন প্রশাসনিক ভবনে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও আসেননি।
আবরোধকারীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের ঘটনায় যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, তাদের তদন্ত প্রতিবেদন গতকাল রবিবার সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, ওই তদন্ত প্রতিবেদনে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেট যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেনি। উপরন্তু তারা বলেছেন, প্রক্টর এবং প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণস্বরূপ কোনো কিছু পাননি। এটা হতেই পারে না। কারণ, আমরা তথ্যপ্রমাণ দিয়েছি, উপস্থাপন করেছি। কিন্তু তারা যেহেতু বলেছেন, তথ্যপ্রমাণ পাননি, এটা দুরভিসন্ধিমূলক।’