টিআরসি রিপোর্টঃ পাওনা টাকা ফেরতের কথা বলে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুরসহ ৫ জনের সনদ স্থগিত করেছে প্রশাসন। আর বহিষ্কার করা হয়েছে আরও ৩ জনকে। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে আজ বিকেল থেকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার সনদ স্থগিত করা হয়েছে। তাকে সহযোগিতাকারী একই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার ও সনদ স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে মুরাদ, সাব্বির ও মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে, ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুরসহ চারজনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবারের ওই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি বহিরাগত মামুন।
এদিকে, এই ঘটনায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদের স্লোগানে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার ও শাস্তির দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার রাতে সাভারের আশুলিয়া এলাকার বাসিন্দা এক দম্পতিকে ক্যাম্পাসে ডেকে আনে সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান এবং তার সহযোগী বহিরাগত মামুন। ওই দম্পতির কাছ থেকে একই বাসার ভাড়াটিয়া মামুন টাকা ধার নিয়েছিল। পাওনা ফেরতের কথা বলে এনে, মীর মোশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর রুমে স্বামীকে মারধরের পর আটকে রাখে। আর পাশের বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে স্ত্রীকে।
রাত ১টা ১৭ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হলের তালা ভাঙছেন ছাত্রলীগ কর্মী সাগর সিদ্দিকী, সাব্বির হাসান সাগর ও হাসান। এর কিছুক্ষণ পরই পালিয়ে যায় মোস্তাফিজুর। তাদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে অপরাধ স্বীকার করেছে মোস্তাফিজুর।
ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে অপরাধ স্বীকার করেছে মোস্তাফিজুর।’
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে বহিরাগতদের অবস্থানের বিষয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে- বলছেন শিক্ষকরা।
তদন্ত ও বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ ঘটনায় ছয় জনকে আসামি করে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী।