জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হলের একটি কক্ষের দরজার কড়া ভেঙে সিটের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে।
১৯ মার্চ ( মঙ্গলবার ) রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তানজিম আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থীর রুমের তালা ভেঙে সিটের নিয়ন্ত্রণ ও নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী তানজিম আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৫০ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তরা হলেন – ইংরেজি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী অনুরাগ দাস , ইউআরপি ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফি এবং আইআইটি ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরমান। অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত দুইটার দিকে অনুরাগের নেতৃত্বে রাফি ও আরমানের সাথে কয়েকজন মিলে তাজউদ্দিন আহমেদ হলের ৮০৮ নম্বর রুমে তালা ভাঙতে যায়। ওই রুমে এলোটেড শিক্ষার্থীরা তালা ভাঙতে বাঁধা দিলে হলের প্রাধ্যক্ষের নির্দেশে তালা ভাঙতে এসেছেন বলে জানান অভিযুক্তরা। এসময় তাদের হাতে রড ছিল বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ বলেন, ’অভিযুক্ত রাফি সন্ধ্যার দিকে কয়েকজন নিয়ে আমাদের রুমে তালা ভাঙতে আসে। তারপর তাদের সাথে কথা বলার পর রাফি বলে বিষয়টা দেখছি। তারপর রাতের দিকে আবার তালা ভাঙতে আসে। এসময় রাফি কাপ ছুড়ে মারায় ভুক্তভোগী তানজিমের পা কেটে যায়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অনুরাগ বলেন, ’আমরা তথ্য পেয়েছিলাম ওই রুমে কেউ থাকে না।তাই আমরা রুমের তালা ভেঙে ভিতরে যায়। রুমে কেউ থাকে না এটা ভুল তথ্য ছিল। একটা একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল।তালা ভাঙার বিষয়টা আমার ভুল হয়েছে , এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিবে মাথা পেতে নিবো।’
মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকা অভিযুক্ত রাফি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ’কয়েকজন শিক্ষার্থী রুম পাচ্ছিল না। তাই আমরা জানতে পারি ৮০৮ নাম্বার রুম খালি ছিল। তাই আমরা ওদের রাখার জন্য তালা ভেঙে ছিলাম। মারধরের ঘটনা ঘটে নি।’ এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত আরমানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তাজউদ্দিন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, ’আমি বিষয়টি অবগত পর দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।’
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ৮০৮ নম্বর রুমের চারজন এলোটেড শিক্ষার্থী।তারা হলেন- ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৫০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ ও আরিফুল, বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শুভ এবং লোকপ্রশাসন ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম।