জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা চার বহিরাগতকে আটকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (২০ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।মারধর এবং ছিনতাইয়ের শিকার ভুক্তভোগীরা হলেন, কৃষ্ণ, উৎপল সরকার, সোহাগ বিশ্বাস, দুর্জয় সরকার। তারা সকলেই সাভারের ফোটনগর এলাকার বাসিন্দা।
অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান নাজিজ এবং একই বিভাগের এহসানুর রহমান রাফি।
ভুক্তভোগীরা জানান, এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ায় আমরা দুটি বাইক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভাই এসে আমাদের পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় দেওয়ার পর বহিরাগত জানতে পেরে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর আরও তিন ভাই এসে আমাদের অচেনা একটি মাঠে ডেকে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। সেখানে আমাদের আটকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমাদের কাছে টাকা না থাকায় বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা এনে তাদের দেই। এছাড়া ভ্লগিংয়ে ব্যবহৃত আমাদের ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা গেরুয়া এলাকার একটি দোকান থেকে বিকাশের টাকা উঠিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে সক্ষম হই।
ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তরা বলেন, বহিরাগত কয়েকটি ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বাজেভাবে বাইক চালাচ্ছিলো। তারা অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে ভিডিও করছিলো। এসময় আমরা তাদের ডেকে কথা বললে তারা তাদের পরিবারকে না জানানোর অনুরোধ করে এবং টাকা দিতে চায়। পরবর্তীতে এক প্রকার জোর করে টাকা এবং ক্যামেরা দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহীন বলেন, আমরা ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগীদের মোবাইলে থাকা জিপিএস ট্র্যাক করি এবং বিকাশের দোকান খুঁজে বের করি। এরপর দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে সমর্থ হই। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে ভুক্তভোগীদের হারানো জিনিসপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর অধ্যাপক মো. আলমগীর কবির বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তরা ঘটনা স্বীকার করে টাকা এবং ক্যামেরা ফেরত দিয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।