জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আগুন দিয়ে পুড়িয়ে প্রাণ-প্রকৃতিসমৃদ্ধ সবুজ বনভূমি ধ্বংসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া ও জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা৷
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল আহসান বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করে এই দাবি জানান তারা৷
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- আজকের পর থেকে চিরতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বনভূমি, সবুজ অঞ্চল বা ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়া বন্ধ করা; আগুনে যে-যে অঞ্চল পুড়েছে, যে-যে গাছের ক্ষতি হয়েছে, সে-সব এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ও চাহিদামোতাবেক এস্টেট অফিসের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ও তাদের লোকবলের মাধ্যমে আগামী এক মাসে বৃক্ষরোপণ করে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা; তদন্ত কমিটিতে বৃক্ষরোপণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ন্যূনতম ৩জন শিক্ষক ও ১০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা; প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে ন্যূনতম ১ হাজার বৃক্ষরোপণ করা।
আগুন দেওয়ার ঘটনায় এস্টেট অফিসকে দায়ী করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, এ-বছর ‘ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার’ যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের ঝোপঝাড় ও ছোট-বড় গাছ, সুইমিংপুলের পেছনের বিশাল সবুজভূমি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল মাঠের ডান পার্শ্বে সুবিশাল সবুজভূমিসহ বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় এই সব বনভূমি ও সবুজভূমির গুরুত্ব অপরিসীম। গত বর্ষায় আমরা বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের কঠোর পরিশ্রম ও সম্মিলিত আর্থিক সহযোগিতায় সারা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ৩ হাজারের অধিক বনজ, ফলজ ও সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষরোপণ করি। বিশেষ করে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল-শূন্যতা রোধ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে মাত্রাতিরিক্ত গরমের কবল থেকে বাঁচার জন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা জারি ছিল। গাছগুলোও অত্যন্ত স্বাভাবিক ও সুন্দরভাবেই বড় হয়ে উঠছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার মদদে ও সহযোগিতায় এই সব এলাকায় আগুন লাগিয়ে গাছের সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় এমন বর্বর কাজ আমরা আর বরদাশত করবো না।
এতে আরো বলা হয়, শুধু এবার নয়, প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সবুজ এলাকা ও বনভূমিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আমরা এই বর্বর ও পরিবেশবিরুদ্ধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল আহসান ধ্বংসপ্রাপ্ত বনভূমিতে পুনরায় বৃক্ষরোপন করার এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন৷