The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জাতীয় সংগীতে পরিবর্তন এনেছে যেসব দেশ

কোটা সংস্কার দিয়ে শুরু করা রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে পতন হয়েছে স্বৈরাচার সরকারের। এরপর থেকে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে সংস্কার। এর সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী সংবিধানের সঙ্গে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানান। এরপরই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

নেটিজেনরা বলছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে এখানে সবারই পরামর্শ-দাবি থাকতে পারে। আযমী একটি প্রস্তাবনা দিয়েছেন এটা গ্রহণ করা না করার বিষয়ে সরকার আলোচনা করতে পারে। আরেকটি পক্ষ বলছে- জাতীয় সংগীত আমাদের আবেগের জায়গা এটা পরিবর্তন করার দাবি কেন সে তুলবেন।

বিশ্বের অনেক দেশেই জাতীয় সংগীত পরিবর্তন হয়েছিল নানা প্রেক্ষাপটে। লিঙ্গবৈষম্য, ভাবমূর্তি পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে অনেক দেশ তাদের জাতীয় সংগীতে পরিবর্তন এনেছে। একনজরে দেখে নেয়া যাক ওইসব দেশগুলো যারা তাদের জাতীয় সংগীতে পরিবর্তন এনেছে। প্রতিবেদন ডয়চে ভেলের।

অস্ট্রেলিয়া
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের ঘোষণার পর ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের জাতীয় সংগীতের একটি ভিন্ন সংস্করণ গাইবেন। নতুন এ জাতীয় সংগীতে অস্ট্রেলিয়াকে আর ‘ইয়াং অ্যান্ড ফ্রি’ হিসেবে আর অভিহিত করা হবে না। আদিবাসীদের সুদীর্ঘ ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটানোর অংশ হিসেবেই এ পরিবর্তন।

জার্মানি
দেশটির সমতা বিষয়ক কমিশনার ক্রিস্টিন রোজে-ম্যোরিং জাতীয় সংগীতে আরো বেশি লিঙ্গ সমতা আনার প্রস্তাব করেছেন। সংগীতের যে অংশে ‘ফাটারলান্ড’ অর্থাৎ ‘পিতৃভূমি’ বলা হচ্ছে, সেখানে ‘হাইমাট’ অর্থাৎ ‘জন্মভূমি’ লেখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ অনেকেই মনে করছেন, জাতীয় সংগীতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন নেই।

অস্ট্রিয়া
২০১২ সালে লিঙ্গ সমতা আনার জন্য অস্ট্রিয়ার জাতীয় সংগীতে ‘ছেলেরা’-এর জায়গায় ‘মেয়েরা এবং ছেলেরা’ লেখা হয়েছে।

কানাডা
উত্তর আমেরিকার এই দেশটিও সম্প্রতি তাদের জাতীয় সংগীতকে আরো লিঙ্গ নিরপেক্ষ করেছে। সংগীতের দ্বিতীয় লাইনে ‘তোমার সব ছেলেরা’-এর জায়গায় লেখা হয়েছে ‘আমরা সবাই’।

নেপাল
২০০৮ সালে নেপালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়। তার আগের বছর নেপালে নতুন একটি গানকে জাতীয় সংগীতের স্বীকৃতি দেয়া হয়। ১৯৬২ সালে গ্রহণ করা নেপালের আগের জাতীয় সংগীতে রাজতন্ত্রের প্রশংসা ছিল। তাই এতে পরিবর্তন আনা হয়।

আফগানিস্তান
দেশটিতে বেশ কয়েকবার জাতীয় সংগীতে পরিবর্তন আনা হয়। তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানে কোনো জাতীয় সংগীতই ছিল না। পরে ২০০২ সালে পুরোনো জাতীয় সংগীতকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। পরে ২০০৬ সালে তৎকালীন কারজাই সরকার সবকিছু নতুন করে শুরু করতে জাতীয় সংগীতও পরিবর্তন করে।

রুয়ান্ডা
আফ্রিকার এই দেশটির কথা উঠলেই গণহত্যার কথা মনে পড়ে। ১৯৯৪ সালে মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে ওই দেশে পাঁচ থেকে ১০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। গণহত্যা পরবর্তী রুয়ান্ডার ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে দেশটি ২০০১ সালে একটি নতুন জাতীয় সংগীত বেছে নেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকা
দেশটি ১৯৯৭ সালে আগের দু’টি জাতীয় সংগীত থেকে কিছু অংশ নিয়ে নতুন একটি জাতীয় সংগীত তৈরি করে। আফ্রিকান ও ইংরেজি ভাষায় গানটি রচিত। তবে আফ্রিকান ভাষার অংশটি বর্ণবাদ আমলে ব্যবহৃত জাতীয় সংগীতের অংশ হওয়ায় এর সমালোচনা করেন অনেকে। নেলসন ম্যান্ডেলা সেটি রিকনসিলিয়েটরি ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণবাদ-পরবর্তী দক্ষিণ আফ্রিকার সংগীত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

রাশিয়া
ভ্লাদিমির পুটিন ২০০০ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ১৯৯০ সালের আগে ব্যবহৃত জাতীয় সংগীত ফিরিয়ে আনেন। তবে গানের কথায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৯০ সালে যে জাতীয় সংগীত গ্রহণ করা হয়েছিল তাতে কোনো কথা না থাকায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া অ্যাথলিটরা এর সমালোচনা করেছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল, কথাবিহীন গান তাদের নাকি উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.