ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় প্রেসক্লাবে কবি হেলাল হাফিজের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, কবির পরিবারের সদস্য এবং ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার নামাজের আগে কবি হেলাল হাফিজের বড় ভাই দুলাল হাফিজ বলেন, ‘আপনারা সবাই আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। হেলালের কোনও আচরণে কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে তাকে ক্ষমা করে দেবেন।’
কবি হাসান হাফিজ বলেন, ‘হেলাল ভাইয়ের মৃত্যু আমার অঙ্গ হানির সমান। আমার কবি হওয়ার পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি।’
জানাজার নামাজ শেষে হেলাল হাফিজকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এ সময় উপদেষ্টা ফারুকী অনেকের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ প্রাঙ্গণে কবির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বিকালে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এর আগে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, বেলা ২টার দিকে শাহবাগের সুপার হোস্টেলের ওয়াশরুমের দরজা খুলে অচেতন অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় কবিকে। সেখান থেকে দ্রুত বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয় তাকে। তবে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যু হয়েছে কবির।
হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন।
হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর, নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’- উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে। ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এর আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।