জাবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ( জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মাহত্যার প্ররোচনা দানকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’।
শনিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে নতুন প্রশাসনিক ভবন হয়ে বটতলায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র-মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক আবিদ ইসলামের সঞ্চালনায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জাহান বলেন, যিনি মারা গেছেন তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মানসপটে যদি অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রবণতা থাকে তাহলে আমরা নারীরা দেশের কোথাও নিরাপদ না। এই ঘটনায় একজনের নাম উঠে এসেছে সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আর অন্যজন একজন সহকারী প্রক্টর।
এই যে এতো নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়, আমাদের আসল চিত্রটা ফাইরুজ অবন্তিকার ঘটনার মধ্য দিয়ে দেখা যায়। ফাইরুজ অবন্তিকার এই ঘটনা কোনো আত্মহত্যা নয় এটি একটি খুন। এর সাথে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তি দিতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের চাটুকার হিসেবে কাজ করে। প্রশাসনকে তার নিজের জায়গায় ফিরে আসা উচিত। যতদিন না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিজস্ব স্বকীয়তায় ফিরে আসবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
বক্তব্য রাখেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান শুভ। তিনি বলেন, শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে না দেশে সব পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রী বিচার চেয়ে দিনের পর দিন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে গেছে। তার হত্যার জন্য দায়ী তার বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলরা। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ধরনের ঘটনার পেছনে বাংলাদেশের ক্ষমতার যে প্রেক্ষাপট একদলীয় যে ক্ষমতা চলমান তার প্রতিফলন।
সমাবেশে সমাপনী বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি বলেন ,”রাষ্ট্রই যখন নিপীড়ক, ধর্ষক, দুর্নীতিগ্রস্ত তখন বিচার আসলে কার কাছে চাইবো? এই রাষ্ট্র একটা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এই রাষ্ট্রে ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা যেমন পুলিশ তেমন র্যাব, যেমন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা, তেমন যুবলীগ ছাত্রলীগ এদের কাছে সমস্তকিছু জিম্মি হয়ে রয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় সবার আগে যে নামটি এসেছে আশ্রয়দাতা হিসেবে তিনি একজন সহকারী প্রক্টর। আমরা যখন প্রতিবাদে নামি এরকম প্রশাসনের লোকজন আমাদেরকে হামলা মামলা করে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যেভাবে অবন্তিকে দমিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা বলতে চাই, আমাদেরকে এভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না, বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিতে আমরা রাজপথে নামবো।”