জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে এক শিক্ষার্থীকে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মারধর এবং ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাখা ছাত্রলীগের নারীকর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সৌরভ দাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সূত্র থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী নয়
সৌরভ দাশ তার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন অভিযুক্তরা হলেন, অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ রানা, ছাত্রলীগ কর্মী সৈকত, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মিনুন মাহফুজ, ছাত্রলীগ নেতা মিরাজ হোসাইন, সজীব, সামিরা মাহমুদ মিথি, রিসাত আরা। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী।
অপরদিকে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে প্রক্টর অফিসে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নারীকর্মী ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সামিরা মাহমুদ মিথী।
অপরদিকে সামিরা মাহমুদ মিথী তার অভিযোগপত্রে বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় আমাদের মেডিকেল সেন্টারে যাই সেখানে আমি এবং আমার এক জুনিয়র রিসাত আরা (১৪ বাচ, দর্শন বিভাগ), ১৬তম ব্যাচের রসায়ন বিভাগের সৌরভ নামের এক ছেলের দ্বারা প্রথমত বেয়াদবি মূলক আচরণ পাই, তাপর অকথ্য ভাষায় গলাগালি এবং যৌন-হয়রানি মূলক ইঙ্গিত দেয়, সাথে তোকে দেখে নিবো এরকম হুমকি প্রদান করে৷ আমি ১২তম ব্যাচ জানার পরেই তোকে খেয়ে ফেলবো, ব্যাচ জানার প্রয়োজন নেই এমন ভাষায় কথা বলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে সেবা নিতে এসে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কর্মী সামিরা মাহমুদ মিথী এবং রিসাত আরার সঙ্গে সৌরভ দাশ নামের ওই শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে বাকবিতণ্ডার মধ্যেই ওই শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে মেডিকেল সেন্টারের বাইরে নিয়ে এসে সহযোগীদের নিয়ে মারধর করেন কয়েকজন।
আহত শিক্ষার্থী সৌরভ দাশ জানান, আমি মেডিকেল রক্তের প্রেসার মাপতে গিয়েছিলাম। কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কথা বলার সময় দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রিসাত আরা নামের একজন শিক্ষার্থী আমাকে চেয়ার থেকে উঠতে বলেন। আমি তাকে আমার চিকিৎসা শেষ করার পরে চেয়ারে বসতে বলি। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমার উপর চড়াও হন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই আপু আমাকে বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ইকবাল মাহমুদ রানা, সৈকত, মিনুন মাহফুজ, মিরাজ হোসাইন, সজীব বুদ্ধসহ আরও বেশ কয়েকজন তাকে কয়েক দফায় মারধর করেন।
পাল্টা অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে সামিরা মাহমুদ মিথিকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে কথা বলতে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনকে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজীকে কল দেয়া হলেও নম্বর ব্যস্ত পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা সৌরভ দাশ নামের ওই শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় পেয়েছি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আমরা অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’