The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

জবির ফটকে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি: সাড়ে সাত একরের ছোট্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে প্রতিদিন প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পদচারণা। ছোট এই ক্যাম্পাসে যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থা না মেনেই দ্বিতীয় ফটকের পাশেই নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা ফেলা রাখা হচ্ছে। এসব ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটকের ঠিক পাশেই বালু ভর্তি খোলা জায়গায় ওয়ার্কশপ নির্মাণের স্থানে নিয়মিত ময়লা-আর্বজনা ফেলা হচ্ছে। খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ সহ বিভিন্ন বিভাগের অপ্রয়োজনীয় জিনিসও এখানে ফেলা হয়। এতে করে দিনকে দিন স্থানটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। ফটকের সামনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়াকৃত বিআরটিসি বাসগুলো রাখা হয়। এতে করে এ ফটক দিয়ে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি হয়। তবে ফটকের পাশেই ময়লা আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এমনকি দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও রয়েছে।

শিক্ষার্থারা জানান, নিয়মিত ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার না করে এমন অবস্থায় চলতে থাকলে এক সময় ময়লার ভাগাড়ের দরুন হয়তো দ্বিতীয় ফটকটিই বন্ধ হয়ে যাবে। ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন তারা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান আরিফ জানায়, দ্বিতীয় ফটকের বাহিরে কিছু ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান ও মাখার দোকান বসে। এজন্য এদিক দিয়ে নিয়মিত আসা যাওয়া করা হয়। তবে গেইটের পাশে এ ময়লা দেখে ওদিক দিয়ে যেতে আর ইচ্ছেই করেনা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সৈয়দ ত্বহা জানান, বাসে যাতায়াত করতে নিয়মিত দ্বিতীয় ফটকে আসাযাওয়া হয়। কিন্তু সকাল বিকেলে ময়লার ভাগাড় দেখে আর সেখানে মাছি উড়া দেখে আমি প্রথম গেট দিয়ে ঘুরে তারপর বাসে যাই। এ ময়লা যেমন পরিবেশ দূষণ করছে তেমনি মশা মাছির মাধ্যমে আমাদের স্বাস্থের উপর প্রভাব ফেলছে। প্রতিদিনই যদি ময়লা অপসারণ করা হতো তাহলে এমন অবস্থা হতোনা।

ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিদিন সকালে ও রাতে পুরো ক্যাম্পাস ঝাড়ু দিতে দেখা গেলেও দিনের অন্য কোনো সময় ময়লা পরিষ্কার না করায় বিভিন্ন ভবনের কোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গা অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও সুইপারের সংকট। সীমিত সংখ্যক দিয়ে ক্যাম্পাসের পরিষ্কার করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার দপ্তরের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের কেয়ারটেকার শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী রেজিস্ট্রার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা নিয়মিত ময়লা পরিস্কার করি। তবে ক্যাম্পাসে ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট  জায়গা না থাকায় বিভিন্ন বিভাগের ময়লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটক সংলগ্ন স্থানে ফেলা হয়।

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট আছে। হল উদ্বোধনের পর যে কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের স্থানে নতুন নিয়োগ হয়নি। কর্মী সংকটের পাশাপাশি ময়লা ফেলার পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলা হয় বাংলাবাজার মোড়ে, যেখানে ময়লা ফেলতে গিয়েও অসহযোগিতার স্বীকার হতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেনগুলোর ভেতর দিয়ে গ্যাস ও পানির লাইন নিয়ে পরিষ্কার করার ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বিষয়টি আমি খেয়াল করেছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিতও করেছি। জায়গা না থাকায় অনেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলছে। দ্বিতীয় ফটকে পরিবহন অফিসের ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হলে আর ময়লা ফেলার সুযোগ থাকবে না। আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ হলে খুব দ্রুতই আমরা নির্মাণ কাজ শুরু করবো।

সাকিবুল ইসলাম/

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.