জন্ম থেকেই দু’চোখে আলো নেই নাজীফা তাসনিম লাবীবার। তাই বলে দমে যায়নি। ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী। চোখে আলো না থাকলেও মনের জোর অনেক গুণ বেশি। একবার শুনলেই পড়া মুখস্থ করে ফেলতে পারে নাজীফা। এই বিদ্যাকে পুঁজি করে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পার করে এসেছেন।
এবার দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা। ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শ্রুতিলেখকের সহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নাজীফা। সে ধুনট সদরের বিলকাজুলী গ্রামের সহকারী অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ লিটনের মেয়ে। গোপালনগর ইউএকে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে নাফীজা। তাকে সহযোগিতা করছে স্কুলছাত্র শ্রুতিলেখক রোকনুজ্জামান।
রোকনুজ্জামান বলে, ‘প্রশ্ন বললেই সঙ্গে সঙ্গে নাজীফা আপু আমাকে উত্তর বলে দেন। আমি শুধু তার হয়ে খাতায় উত্তর লিখে দিচ্ছি। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। পরীক্ষা ভালো হয়েছে।’
নাজীফা জানায়, ব্রেইল পদ্ধতি, অডিও রেকর্ডিং ও ইউটিউবে লেকচার শুনে পাড়া মুখস্থ করে। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় মেধাতালিকায় বৃত্তি পেয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি গানবাজনায় সে সমানভাবে পারদর্শী। ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত শিক্ষক হতে চায় অদম্য মেধাবী এই শিক্ষার্থী।
নাজীফার বাবা ওবায়দুল্লাহ লিটন বলেন, ‘জন্মগতভাবেই নাজীফা চোখে কম দেখে। অনেক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও কোনো সুফল মেলেনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে নাজীফা পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। তার স্মরণশক্তি খুব ভালো। আমি এখন আশাবাদী, সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে।’
এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রসচিব তফিজ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে নাজীফাকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব পালন করছে।’