The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪

চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব, বাংলাদেশকে সতর্ক হতে হবে

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে। দেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প চীন থেকে কাঁচামাল ও কারখানার সরঞ্জাম সহজলভ্য দামে সংগ্রহ করে। আর বেশিরভাগ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য ধনী দেশে রফতানি করা হয়। সম্প্রতি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে চীন থেকে তুলা আমদানির ঝুঁকির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং তার ফেসবুক পেজে মঙ্গলবার বাংলাদেশকে সতর্ক করে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

গোটা বিষয়টি দেশের রফতানি খাতকে কিছুটা অস্থিতিশীল করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাবেক কূটনীতিকরা। তাদের মতে, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সতর্কতার সঙ্গে ভারসাম্যমূলক নীতি গ্রহণ করে এ বিষয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ বিষয়ে সাবেক এক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে টেনশন ছিল, সেটি দ্বন্দ্বে উপনীত হয়েছে। এর প্রভাব সব জায়গায় পড়ছে। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়।

ভূ-রাজনীতি ও বাণিজ্যের সম্পর্ক অনেক পুরনো। এ দুটিকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাজনীতি ও বাণিজ্য উভয়ই ভূমিকা রাখে। তবে কোনটি কতটুকু ভূমিকা রাখবে সেটি স্থিতিশীলতাসহ অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল।’

বৃহৎ দুই শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্বের পরিধি ও মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর সরকার সবার সঙ্গে কথা বলে জাতীয় স্বার্থ নির্ধারণ করে এবং সেটি বজায় রাখার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে হবে সরকারকে।

চীনে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে বলেন, দুই শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব না থাকলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এটি আছে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে কোনও কিছু বলার ক্ষেত্রে সতর্ক করে তিনি বলেন, যেকোনও প্রকাশ্য মন্তব্য কাউকে খুশি করবে এবং কাউকে অখুশি করবে। সেজন্য প্রকাশ্য মন্তব্য পরিহার করা দরকার।

জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ভারসাম্য নীতির অনুসরণের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে ভাবনা— উভয় থেকেই বাংলাদেশের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ। একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে গ্রহণ করলে ভারসাম্যে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।

ভারসাম্য নীতি কী হবে সেটি সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য যুক্তরাষ্ট্র, চীন, আঞ্চলিক শক্তিসহ সবার সঙ্গে আলোচনার কোনও বিকল্প নেই।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব, বাংলাদেশকে সতর্ক হতে হবে

চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব, বাংলাদেশকে সতর্ক হতে হবে

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে। দেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প চীন থেকে কাঁচামাল ও কারখানার সরঞ্জাম সহজলভ্য দামে সংগ্রহ করে। আর বেশিরভাগ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য ধনী দেশে রফতানি করা হয়। সম্প্রতি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে চীন থেকে তুলা আমদানির ঝুঁকির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং তার ফেসবুক পেজে মঙ্গলবার বাংলাদেশকে সতর্ক করে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

গোটা বিষয়টি দেশের রফতানি খাতকে কিছুটা অস্থিতিশীল করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাবেক কূটনীতিকরা। তাদের মতে, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সতর্কতার সঙ্গে ভারসাম্যমূলক নীতি গ্রহণ করে এ বিষয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ বিষয়ে সাবেক এক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে টেনশন ছিল, সেটি দ্বন্দ্বে উপনীত হয়েছে। এর প্রভাব সব জায়গায় পড়ছে। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়।

ভূ-রাজনীতি ও বাণিজ্যের সম্পর্ক অনেক পুরনো। এ দুটিকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাজনীতি ও বাণিজ্য উভয়ই ভূমিকা রাখে। তবে কোনটি কতটুকু ভূমিকা রাখবে সেটি স্থিতিশীলতাসহ অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল।’

বৃহৎ দুই শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্বের পরিধি ও মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর সরকার সবার সঙ্গে কথা বলে জাতীয় স্বার্থ নির্ধারণ করে এবং সেটি বজায় রাখার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে হবে সরকারকে।

চীনে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে বলেন, দুই শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব না থাকলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এটি আছে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে কোনও কিছু বলার ক্ষেত্রে সতর্ক করে তিনি বলেন, যেকোনও প্রকাশ্য মন্তব্য কাউকে খুশি করবে এবং কাউকে অখুশি করবে। সেজন্য প্রকাশ্য মন্তব্য পরিহার করা দরকার।

জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ভারসাম্য নীতির অনুসরণের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে ভাবনা— উভয় থেকেই বাংলাদেশের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ। একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে গ্রহণ করলে ভারসাম্যে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।

ভারসাম্য নীতি কী হবে সেটি সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য যুক্তরাষ্ট্র, চীন, আঞ্চলিক শক্তিসহ সবার সঙ্গে আলোচনার কোনও বিকল্প নেই।’

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন