বাকৃবি প্রতিনিধি: সকল চাকুরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সম্প্রতি সরকারি চাকুরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পুণর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনে করে শিক্ষার্থীরা ।
সোমবার (১জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সম্রাট বলেন, সকল সেক্টরে পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্যের কারণেই জাতির পিতা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ডাক দেন এবং বাংলার দামাল ছেলেরা জয় ছিনিয়ে নিয়া আসে। আজকে আবারো সেই বৈষম্যনীতি চালু হচ্ছে সব ধরনের জব সেক্টরে যেটা আমাদের ৩০ লক্ষ শহীদ এবং মা বোনদের আত্নত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে ব্যার্থ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবারো বিশ্বদরবারে ফুটিয়ে তুলতেছে। সংবিধান অনুযায়ী চাকরিতে বৈষম্যের কোনো ঠাঁই নেই। এমন বৈষম্যের মাধ্যমে ছাত্রদের এভাবে শেষ করে দিলে দেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে। তাই প্রতিবন্ধী বাদে সব ধরনের কোটা সকল চাকরি থেকে বাতিল করে মেধাবীদের মুক্তি দিতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্যসন্তান তাদের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। স্বাধীনতার এতোগুলো বছর পরে এসেও নতুন করে কোটা বৈষম্য তৈরী করা হলে সেটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথেই সাংঘর্ষিক। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালির যে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটেছিলো আজকে কোটা দিয়ে বৈষম্য তৈরীর মাধ্যমে আমাদের সেই অর্জনকেই মলিন করে দেয়া হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের এই যুগান্তকারী সময়ে আমরা কোটা বৈষম্যের স্বীকার হতে চাই না। সকল শিক্ষার্থীকে তাদের মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, গত ৫জুন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।