নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) একাডেমিক ভবন-২ এর চলন্ত লিফটে আটকা পড়ে আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা। এক প্রকার মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে ভবনের দুইটি লিফটই। দায়ভার এড়িয়ে যেতে ব্যস্ততার সীমা নেই দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের, সাথে রয়েছে দায় ছোঁড়াছুড়ি’র প্রতিযোগিতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যা ৬টায় হঠাৎ লিফট বন্ধ হয়ে যায়। এতে আটকা পড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে লিফটের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
লিফটে আটকা পড়া অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী স্মৃতি চক্রবর্তী বর্ণনা করেন লিফটে আটকে থাকার ভয়াল অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ডিপার্টমেন্টের প্রেজেন্টেশন শেষে সন্ধ্যা ৬ টায় আমরা ইকোনমিকস ডিপার্টমেন্টের ৬ জন একাডেমিক ২ এর ১০ তলায় লিফটে উঠে। লিফটে উঠার পর হঠাৎ লোডশেডিং এর কারণে আমরা ৬ জন লিফটে আটকে যায়। কিছুক্ষণ আটকে থাকার পর লিফটে জরুরি নম্বরে ফোন দেওয়ার পর ঐ নম্বর থেকে বলতেছে ” আমি তো ছুটিতে আছি। লিফটটা তো নষ্ট। আপনারা অমুক স্যারকে ফোন দেন”। আমি তখন বললাম ” আপনি তাহলে ঐ স্যারের নম্বরটা বলেন, আমি নোট করতেছি। উনি এ কথা শুনে ফোন কেটে দিলেন। বেশ অনেকক্ষণ লিফটে আটকে থাকার পর ডিপার্টমেন্টের স্যারের সহযোগিতায় আমরা বের হয়ে আসতে পারি।
লিফটে আটকে পড়া অর্থনীতি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তানভীর হোসেন বলেন,লোডশেডিং হয়েছে কিছুক্ষণ পর চলে আসবে ভেবে আমরা প্রথমে ব্যাপারটা গায়ে নেয় নি। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর যখন দেখলাম লিফট চালু হয় নি তখন সবাই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তখন লিফটের ভেতর খুব গরম লাগতেছিলো, ২-১ জনের হাত-পা ঘেমে গিয়েছিলো। কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছিলো, আর বুঝি এখান থেকে বের হতে পারবো না।
নোবিপ্রবির প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায় , নোবিপ্রবিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৫০০ কেভিএ একটি এবং ২৫০ কেবিএ দুইটি ডিজেল জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হলে জেনারেটর দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাগার, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকদের অফিস ও লিফটসহ সম্পূর্ণ ভবনে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনসহ লিফট গুলো সকাল ৯.৩০ থেকে বিকেল ৪.৩০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
লিফটগুলো সকাল ৯.৩০ থেকে বিকেল ৪.৩০ পর্যন্ত চালু থাকলেও মাঝেমধ্যে বন্ধ থাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) মো. শরিফ হোসেন বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লিফটে সমস্যা দেখা দেয়। লিফটে সমস্যা হওয়ার সাথে সাথে আমরা সমস্যা সমাধান করি।
নোবিপ্রবির এসব লিফট নিয়ে নিরাপত্তা আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নিরাপদ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তুত। লিফট সমস্যা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কালের (৩০ অক্টোবর) লিফটে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের লিফটে আটকে পড়ার বিষয়টি জেনেছি। লিফট নিয়ে যেন শিক্ষার্থীদের আতঙ্কে না থাকতে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।