নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ২ লাখ ১৩ হাজার টাকায় একটি নামফলক তৈরির কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ঠিকাদারকে মারধর করা হলে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই ঠিকাদার।
জানা যায়, ৩১ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী ঠিকাদার তামজিদ উদ্দিন হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মেহেদী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাফায়েত হোসেন, উপ কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক মাশরুর কামাল অনিক ও সহ সম্পাদক মোহাম্মদ হৃদয়।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাটহাজারী থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে একটি নামফলক নির্মাণ করার জন্য ডিন অফিস থেকে দায়িত্ব পায় মেসার্স আরএস এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা সেখানে কাজ করতে গেলে বাধা দেন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। পরে অভিযুক্তরা তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় মারধর করা হয় তাদের।
ঠিকাদার তামজিদ উদ্দিন বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে সংস্কারের অংশ হিসেবে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে একটি নামফলকের কাজ পাই আমি। কাজটির জন্য ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও অভিযুক্ত ৪ ছাত্রলীগ নেতা আমার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারেন। তাদের হাত থেকে বাঁচাতে আমার বন্ধু ফাহিম আলম এগিয়ে এলে তাকেও আসামিরা লোহার রড ও কাঠের বাটাম দিয়া এলোপাতাড়ি পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। এরপর তারা আমাদেরকে আব্দুর রব হলে নিয়ে গিয়ে ২৫ মিনিট মত আটকে রেখে হুমকি-ধমকি দেন। সেখান থেকে কোনোমতে বের হয়ে আমি প্রক্টর কার্যালয়ে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেই।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, আমাদের বিভাগের নামফলক না থাকায় একটি নামফলক নির্মাণ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেখানে কয়েকজন ছাত্র তাদের কাজ করতে বাধা এবং চাঁদা দাবির বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরে আমি বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়েছি।
চবি প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম শিকদার বলেন, এরকম একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। রেজিস্টারের মাধ্যমে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী রোববার তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আমরা জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চার ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি তারা।