বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষ করে নামতে হতো এক কঠিন যুদ্ধে। আর সেই যুদ্ধের নাম ‘সার্টিফিকেট উত্তোলনের যুদ্ধ’। ক্যাম্পাসে প্রচলিত রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট অর্জনের চেয়ে সার্টিফিকেট উত্তোলন কঠিন।
দীর্ঘদিনের সনদ উত্তোলন সংক্রান্ত ভোগান্তি কমাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ নিয়েছে এক নতুন উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের সনদ সংগ্রহ ও সংশোধনের প্রক্রিয়া সহজ করতে চালু করা হয়েছে ‘ই-মেইলিং সার্টিফিকেশন সার্ভিস’। যার ফলে ৩ দিনেই পাওয়া যাবে জরুরি সনদ।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে সার্ভিসটি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, আমরা ই-মেইলিং সার্টিফিকেশন সার্ভিসেস নামে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সেবা চালু করেছি। এই সেবায় শিক্ষার্থীরা ৩ দিনের মধ্যে জরুরিভাবে সনদ তুলে নিতে পারবেন। তাছাড়া নিয়মিতভাবে সনদ তুলে নিতে তাদের মাত্র ৭ দিন সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এই সার্ভিসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সার্টিফিকেটের জন্য জমাকৃত আবেদনের আপডেট জানতে পারবেন। একজন শিক্ষার্থী সনদের জন্য আবেদন করলে সেটি আমাদের কম্পিউটারে আসবে এবং তাকে ই-মেইলে জানিয়ে দেওয়া হবে, তার আবেদন সাবমিট হয়েছে। আমরা আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে যদি দেখি সবকিছু ঠিক আছে তবে তাকে জানানো হবে আপনার আবেদন সফলভাবে সাবমিট হয়েছে। আবেদনে কোনো সমস্যা থাকলে আবেদনকারীকে সুনির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হবে কোথায় ভুল আছে।
পরে তা সংশোধন করা হলে শিক্ষার্থীদের সনদ নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি ছাড়াই সনদ নিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সনদ লেখক মাত্র দুইজন। যদি আরও একজন লেখক নিয়োগ দেওয়া যায় তবে কাজগুলো আরও সুন্দর হবে। এখনও আমাদের পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণে রয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা পুরোপুরি সফলভাবে এই সেবা চালু করতে পারবো আশাকরি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা সনদের জন্য ১ মাস আগে আবেদন করে মনে করতো তাদের সনদ প্রস্তুত হয়ে গেছে। অনেক দূর থেকে এসে যখন দেখতো সেটা হয়নি তখন কান্নাকাটি করতো। দূর-দূরান্ত থেকে এসে ভোগান্তির শিকার হতো। এখন সেটা আর হবে না। একজন শিক্ষার্থী ই-মেইলের মাধ্যমে জানতে পারবে তাকে কোন তারিখে এসে সনদ তুলে নিতে হবে বা তার সনদ প্রস্তুত হয়েছে কি-না।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এই সিস্টেম চালু করেছি। এতে দূর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের আর ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। সনদ প্রস্তুত হলে তারা জানতে পারবে এবং নিজেদের সময়মত এসে সনদ তুলে নিতে পারবে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।