জাবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবামৃত সংঘের (ইসকনের) বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সংগঠনিটির কর্মীদের দ্বারা এক আইনজীবী হথ্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যাললেয়র বটতলা এলাকা থেকে মিছিল বের করেন তারা। এতে অর্ধ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। মিছিলটি বিভিন্ন আবাসিক হল প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে- ‘এই বাংলায় হবে না, উগ্রবাদের ঠিকানা, হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই, উগ্রবাদের ঠাঁই নাই’ সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেওয়া হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুলের হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এর বিচারের দাবি করেন। বাংলাদেশকে অস্থির করার জন্য দূরভিসন্ধিসূলকভাবে এমন হত্যাকাÐ ঘটানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।
তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা সম্মিলিতভাবে দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করেছি। তারপর থেকেই পতিত সরকার সম্প্রীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। এ হত্যাকাÐ তারই অংশ। আমরা অবিলম্বে এর বিচার দাবি করছি।
মার্কেটিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, বাংলাদেশ চিরায়ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধানোর মত কার্যক্রম মেনে নেওয়া হবে না। পাশাপাশি উগ্রবাদী ও জঙ্গিবাদী যেকোনো কার্যক্রমকে কোনোরুপ সুযোগ দেওয়ার অবকাশ নেই।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়েব হাসান ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আনজুম শাহরিয়ার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে একইদিন বিকাল পৌনে পাঁচটায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সনাতনী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তবে ২০ মিনিট পর অবরোধ তুলে নেন তারা। অবরোধ চলাকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় পাশে যানযটের সৃষ্টি হয়।
এদিকে মহাসড়ক অবরোধ করার প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে কয়েকজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীকে যানবাহনের যাত্রীদের গালিগালাজ করতে দেখা যায়। এমনকি তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে মারধর করার হুমকি দিতে থাকেন সনাতনী ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন সড়কে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘চিন্ময় প্রভুর কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘তুমি কে আমি কে, সনাতনী সনাতনী’, ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ দাদার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।