উপকূল পার হয়ে গেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এর প্রভাবে দক্ষিণের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকা। বরিশালে ভবনের দেয়াল ধসে দু’জন, ভোলায় ঘরচাপায় বৃদ্ধসহপাঁচ জেলায় প্রাণ গেছে সাত জনের। উপকূলে জলোচ্ছাসে ভেঙেছে বাঁধ। ফাঁটল দেখা দিয়েছে অনেক জায়গায়। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন উপকূলীয় এলাকার লাখ লাখ মানুষ।
বরগুনায় জলোচ্ছাসে বাধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। ভোলায় ঝড়, বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কেটেছে উপকূলীয় এলাকার লক্ষাধিক মানুষের।
রিমালের আঘাতে প্লাবিত হয়েছে পুরো পিরোজপুর। বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাসে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ। তলিয়ে গেছে সবজি ও ফসলের ক্ষেত।
বিষখালী ও সুগন্ধা নদীর ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসে তলিয়েছে ঝালকাঠির বিস্তির্ণ এলাকা। শতশত পরিবার পানিবন্দি। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে গাছপালা, মাছ ও ফসলের। বিদ্যুৎতের খুঁটি ভেঙে পুরো জেলা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ ভবন ও নির্বাহী অফিসারের বাসভবন দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তালিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনিতে জোয়ারের পানিতে বেঁড়িবাধ উপচে তলিয়ে গেছে অর্ধশতাধিক মাছের ঘের। কয়েক জায়গায় বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসে গেছে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি। সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে অনেক এলাকায় যোগাযোগে বিঘ্নিত হয়।
বাগেরহাটে বিভিন্ন জায়গায় সংযোগ লাইনে গাছপালা পড়ায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো জেলা। অন্তত তিনটি জায়গায় বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। নির্ঘুম রাত কেটেছে বাগেরহাটবাসীর।
মোংলা উপকুলে রাতভর ধমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি হয়। তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট, মাছের ঘের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি।
ভারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয় চট্টগ্রামে। বর্ষার সঙ্গে জোয়ারের পানি মিশে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীকে। বায়েজিদ এলাকায় দেয়াল ধসে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ১৭ ঘণ্টা পর চট্টগ্রাম বিমান বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়েছে। একই সাথে শুরু হয়েছে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম। বন্দর জেটিতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে জাহাজগুলো।