কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ১১ নং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের পুড়ে যাওয়া স্থান থেকে এখনও বের হচ্ছে ধোঁয়া। চারদিকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ ঘিরেই জটলা পেকে বসে আছে মানুষ।
রবিবার দুপুরে পুড়ে যাওয়া স্থানে এখন কোন বাড়িঘর উঠেনি। খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা। অনেকেই অনাহারে দিন পার করছে। ক্যাম্প এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানির সংকট। এদিকে অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে পাশ্ববর্তী ক্যাম্পে আত্মীয়ের বাসায়। কিছু রোহিঙ্গার ঠাঁই হয়েছে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে একটি ট্রানজিট কেন্দ্রে।
সোমবার ৬ মার্চ সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থান দেখতে ভিড়ছে করছে সাধারণ মানুষ। পাশ্ববর্তী ক্যাম্প থেকেও এসেছে ধ্বংসস্তুপ দেখতে। সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া অনেক রোহিঙ্গা দ্রুত ঘর নির্মানের আহবান জানান দাতা সংস্থার কাছে।
ইউএনএইচসিআর-এর এসিস্ট্যান্ট কমিউনিকেশন অফিসার মোস্তফা মনোয়ার সাজ্জাদ জামান, জাতিসংঘের হিসেব মতে, অগ্নিকাণ্ডে ২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসতি সম্পূর্ন পুড়ে গেছে। অন্তত ১২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা এ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পুড়ে গেছে হাসপাতাল, শিশুদের স্কুলসহ বহু স্থাপনা। তিনি বলেন, পুড়ে যাওয়া ক্যাম্পটিতে ১২ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করত।
রবিবার ( ৫ মার্চ) দুপুরে ১১নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি- ১৫ ব্লকে আগুনের সুত্রপাত হয়। প্রায় তিন ঘন্টা পর সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের ১০ টি ইউনিট সহ স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিক অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখন জানা যায়নি। তবে, ঘরে আগুন দেয়ার অভিযোগ এনে এক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দিয়েছে কমিটিকে।
এর আগে , ২০২১ সালে ২২ মার্চ একই ক্যাম্প সহ পাশ্ববর্তী তিনটি ক্যাম্পে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় আগুনে দশ হাজারেরও বেশি বসতঘর পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা সদস্য গৃহহারা হয়েছিল। এছাড়া দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ ৭ জন রোহিঙ্গা মারা গিয়েছিল সে সময়ে।
তাফহীমুল আনাম/