The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে উদাসীনতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া কি আদৌও সম্ভব?

মেহেদী হাসান আহাদঃ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে গোটা দেশ, কিন্তু বৃষ্টির কাঁদা জলে আজও ভাসছে গ্রামীণ কাঁচা সড়ক ও গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের স্বপ্ন । আজন্মকাল ধরে বয়ে আসা গ্রামের আঁকাবাকা কাঁচা রাস্তা গুলো একসময় রূপ কথার গল্প হলেও বর্তমানে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এখন তা ভোগান্তির গল্পে পরিণত হয়েছে।

ক্ষমতাশীল আওয়ামিলীগ সরকারেরের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দেশের অভূতপূর্ব পরিবর্তন আর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্যি সেই উন্নয়ন কিছুটা নগর কেন্দ্রীকই বলা চলে। গ্রামীণ জনজীবনের প্রতি সরকারের একটু উদাসীনতা থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু গ্রামকে উন্নত না করে আদৌও ডিজিটাল বাংলাদেশ কি সম্ভব??

আমরা উন্নয়নের মহা চূড়ায় দাঁড়িয়ে , অথচ স্মার্ট, ডিজিটাল, টেকসই উন্নত গ্রাম এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তসলিমা নাসরিনের একটা কথা মনে পড়ে গেল, ‘…..এত যে পুরুষ দেখি চারদিকে, কই, প্রেমিক তো দেখি না।’ তার সাথে গলা মিলিয়ে বলতে চাই, এত যে রাস্তাঘাট দেখি, গ্রামের কোথাও টেকসই, মজবুত, রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট, কাদামুক্ত পথঘাট তো দেখি না। আমরা কেন পিছিয়ে আছি, কেন গ্রামকে মফস্বল থেকে আধুনিক নগরায়ণ করতে ব্যর্থ হচ্ছি। কেন গ্রামে গ্রামে মানসম্মত হাসপাতাল , স্কুল, মন্দির, মসজিদ, গ্রন্থাগার, শস্য হিমাগার, এটিএম বুথ, এজেন্ট ব্যাংকিং তৈরিতে পিছিয়ে আমরা। ভালো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কেন তৈরি হচ্ছে না, ভালো উদ্যোক্তারা কেন ঘন মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছেন। উপরিউক্ত বিষয়গুলোর মূল ভিত্তি হলো যোগাযোগব্যবস্থা (মজবুত সড়ক)। প্রকৃতপক্ষে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা মানুষের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করে তুলে।

সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালের আগে যেখানে ডিজিটাল গ্রাম হওয়ার কথা ছিল, সেখানে আজও আমাদের গ্রামীন সড়কের কাদা এড়াতে খেত-খামার ডিঙিয়ে পার হতে হচ্ছে। এখনো শহরের পাকা রাস্তার ওপর দিয়ে পানি সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সারা বিশ্ব, তথা বাংলাদেশে এখন অনেক উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। রাস্তাঘাট, অর্থাৎ যোগাযোগব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। তারপরও দেশের কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নের হাওয়া লাগতে পারেনি স্থানীয় কিছু মানুষ আর জনপ্রতিনিধির আন্তরিকতার অভাবে। স্থানীয় নির্বাচন এলেই ঝোলাকে মূলা দেখিয়ে বড় বড় স্বপ্ন দেখিয়ে ভোট নিয়ে একবার ক্ষমতার গদিতে বসলেই ভুলে যায় সব প্রতিশ্রুতি, থাকেনা কোন পৃষ্ঠপোষকতা ।

বর্তমানে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম চলছে কিছুটা ঔপনিবেশিক কায়দায়। এখানে লোকদেখানো কর্মকাণ্ড ছাড়া কিছুই হচ্ছেনা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার উল্লেখ করেছিল, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। ডিজিটাল হয়েছে অনেক কিছু। যেমন প্রিপেইড মিটার,স্যাটেলাইট, ডিজিটাল জন্মসনদ, ডিজিটাল জাতীয় পরিচয়পত্র। কিন্তু গ্রামীণ উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকায় যাঁরা, তাঁরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের রূপকল্পে তাল মেলাতে পারেননি। গ্রামের প্রতি এমন উদাসীনতা রেখে ২০৪১ সালের মধ্যেও স্মার্ট ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়েও তাল মেলাতে পারবে কি না প্রশ্ন থেকেই যায়।

লেখক: শিক্ষার্থী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ময়মনসিংহ

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.