সাকিবুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি: রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ধুপখোলা বাজারে তিতাসের গ্যাসের লাইন মেরামতের সময় বিস্ফোরণের দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান শাওন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার ভোর ৫ টা ৫০ মিনিটের দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ধুপখোলা মাছ বাজারে একটি বাড়ির পাশের মুদি দোকানের সামনের রাস্তায় তিতাস গ্যাস লাইনের মেরামত চলছিল। হঠাৎ সেখান থেকে বিস্ফোরণ হয়। ঘটনার দিন কাঁচা বাজার করতে গিয়েছিলেন শাওন। বাজার করা শেষে বাসায় ফেরার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। এতে তিনি দগ্ধ হয়েছিল। এ ঘটনায় শাওন সহ আরও আট জন দগ্ধ হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ধূপখোলা বাজারে গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত আমাদের ছাত্র মেহেদী হাসান শাওন শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার তার মৃত্যুতে শোকাহত। আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
নিহত শাওনের বন্ধু মো. হাসান আলী জানান, আমার বন্ধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বাজার করার জন্য বাজারে গেলে এই ঘটনাটি ঘটে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, শাওনের বাড়ি নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার রহিমানপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল লতিফ। বর্তমানে তিনি গেণ্ডারিয়া ডিস্ট্রিলারি রোডের একটি মেসে থাকতেন। নিহত এক ভাই এক বোন সে ছিল সবার মধ্যে বড়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইয়ুব হোসেন বলেন, গেন্ডারিয়া থেকে আগুনের ঘটনায় শনিবার সকাল ছয়টার দিকে আইসিইউ এর ২০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার শরীরে ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
গেন্ডারিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এঘটনায় আগুনে পুড়ে যাওয়ার একটি মামলা হয়েছে।’
এদিকে শাওনের মৃত্যুতে তার পরিবার এ বন্ধুবান্ধবের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
এর আগে পহেলা মে সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ধুপখোলা বাজারে রাস্তার গ্যাস লাইন মেরামতের সময় বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ আটজন আহত হয়। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ও শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে আরও তিন জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন আব্দুল রহিম (৫০) মিম আক্তার (২১) ও নাতি আলিফ (২)।