বাকৃবি প্রতিনিধিঃ পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের কোর্সের মধ্যে ৭০ শতাংশ মিল রয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে পশুপালনের সাথে ভেটেরিনারি অনুষদের পড়াশোনার তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তবে ভেটেরিনারিতে শুধু পুষ্টি সম্পর্কিত বিষয় পড়ানো হয় কিন্তু পুষ্টিহীনতা বা পুষ্টির সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে কি কি রোগ হতে পারে সেগুলো পড়ানো হয় না। প্রায় একই কোর্স ক্যারিকুলামে পড়ালেখা চললেও শুধু নামে ভিন্নতা থাকায় ডিভিএম ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা চাকুরীর কিছু ক্ষেত্রে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশকে সঠিক ভেটেরিনারি সেবা প্রদান করতে স্মার্ট ও দক্ষ গ্র্যাজুয়েট গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালায় ডিভিএম ডিগ্রিধারীদের আবেদনের সুযোগ না দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (০৬ জুন) দুপুরে ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন কনফারেন্স রূমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাকৃবি সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা জুয়েনা।
গত ৩০ মে গণপ্রজতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারি) নিয়োগ বিধিমালা-২০২৩ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত গেজেটে সহকারী ব্যবস্থাপক, সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট অফিসার, অ্যানিমাল প্রোডাকশন অফিসার, পশুপালন কর্মকর্তা, জ্যু অফিসার পদগুলোতে বিএসসি এনিমেল হাজবেন্ড্রি ও ভেটেরিনারি সাইন্স এন্ড এনিম্যাল হাজব্যান্ড্রি ডিগ্রি ধারীরা আবেদন করতে পারবে। ডিভিএম ডিগ্রীধারীদের এ বিষয়ে আবেদনের কথা বলা হয়নি। এতে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উদ্বেগ জানিয়ে প্রকাশিত গেজেটে ডিভিএম ডিগ্রির অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি অভিন্ন ডিগ্রি চালুর দাবির জানায়।
জানা যায়, দেশের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেরিনারি বিষয়ে তিনটি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ডিগ্রিগুলো হলো ডিভিএম (ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন), বিএসসি ইন এনিম্যাল হাজব্যান্ড্রি, বি.এসসি. ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স এন্ড এনিম্যাল হাজব্যান্ড্রি। প্রকাশিত গেজেটে বিএসসি ইন এনিম্যাল হাজব্যান্ড্রি ও বি.এসসি. ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স এন্ড এনিম্যাল হাজব্যান্ড্রি ডিগ্রির উল্লেখ থাকলেও ডিভিএম ডিগ্রির কথা উল্লেখ নেই।
অধ্যাপক ড. মো.মকবুল হোসেন বলেন, আলাদা আলাদা ডিগ্রি চালু থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি দেশের প্রাণিসম্পদও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে সেবাদানের ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা চাহিদার সম্পূর্ণ সেবা দিতে পারছে না। এতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা ডিগ্রীধারীদের চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ কমছে। এতে দেশের আমাদেও গ্র্যাজুয়েট, দেশের কৃষকের পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই দেশের প্রাণিসম্পদকে বিকশিত করতে দ্রুততার সাথে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ডিগ্রি চালু করতে হবে। দক্ষ দক্ষ গ্র্যাজুয়েট গড়ে তুলতে এর কোন বিকল্প নেই। এতে দেশ ও জাতি উভয়ই উপকৃত হবে।