গুচ্ছ ভর্তি যুদ্ধ শুরু শনিবার, প্রস্তুত জবি
জবি প্রতিনিধি: দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও বিবিএ প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা শনিবার শুরু হবে। মানবিক বিভাগের ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে গুচ্ছ ভর্তিযুদ্ধ। ১৯ টি কেন্দ্রে একযোগে দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়ে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা এ পরীক্ষা চলবে। ১০০ নম্বরের এ পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩০। এরই মধ্যে পরীক্ষা নিতে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক এবং টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক জানান, মানবিক শাখার ‘বি’ ইউনিটে এবার সর্বমোট আবেদন পড়েছে ৯৬ হাজার ৪৩৪টি। এই ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ৭ হাজার ৭৪৬ টি, যেখানে প্রতি আসন লড়বেন ১৩ জন। ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, আবেদনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ করেছেন। এবার ‘বি’ ইউনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আবেদন করেছেন ২১ হাজার ৬৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিবেন ১২ হাজার ৮৪৫ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক নাছিম আখতার জানান, ১৯ কেন্দ্রের রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এই চারটি কেন্দ্রের উপকেন্দ্র রয়েছে।
তিনি জানান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭ হাজার ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ২ হাজার ১৩৬ জন পরীক্ষার্থী ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ২০৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, সকাল ৯টা থেকেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। তবে নির্ধারিত কক্ষ খোলা হবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে। প্রবেশপত্র ও নির্দেশিত অন্যান্য কাগজপত্রসহ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। কোন ব্যাগ, মোবাইল কিংবা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবেনা। প্রতি বেঞ্চে এবার দুই জন পরীক্ষা দিবেন। শিক্ষার্থীদের আসন বিন্যাসও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন জানান, তিনটি উপকেন্দ্র উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল, নটরডেম কলেজ ও উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন বিন্যাস করা হয়েছে। এর মধ্যে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে পরীক্ষা দিবেন ৩ হাজার ৩৯৬ জন শিক্ষার্থী, নটরডেম কলেজে ৩ হাজার ১০৪ জন ও উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিবেন ১ হাজার ৭২০ জন শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যেই সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে সবকিছু বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলো অবশ্যই মানতে হবে। নিরাপত্তা রক্ষার্থে পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য কেন্দ্রে থাকবে। পরীক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে আসতে পারে সেজন্য ট্রাফিক বিভাগ ব্যবস্থা নিবেন। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাও সার্বক্ষণিক কেন্দ্রে থাকবেন। পাশাপাশি বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও রেঞ্জার ইউনিটের ৬৫জন সদস্য শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে। সবার সহযোগিতায় ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
আগামী ২০ মে মানবিক বিভাগ, ২৭ মে বাণিজ্য বিভাগ ও ৩ জুন বিজ্ঞান বিভাগের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ফল প্রকাশ করা হবে আগামী ৮ জুনের মধ্যে।
ভর্তি পরীক্ষার সকল তথ্য গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে (www.gstadmission.ac.bd) পাওয়া যাবে।
গুচ্ছভুক্ত ২২টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সিলেট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুলনা), হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (দিনাজপুর), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (টাঙ্গাইল), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোয়াখালী), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যশোর), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (রংপুর), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবনা), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (বরিশাল), রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাঙ্গামাটি), রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (সিরাজগঞ্জ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (গাজীপুর), শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোনা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জামালপুর), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পটুয়াখালী), কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ) এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চাঁদপুর)।