The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২৭৬৫ আসনের বিপরীতে ডাকা হয়েছে ১৮ হাজার, তবুও আসন ফাঁকা

শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, থাকা এবং অর্থ ব্যয়সহ নানান দুর্ভোগ লাঘবের জন্য এ বছর প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দেশের ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই পরীক্ষায় নেতৃত্ব দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার উপরের দিকে থাকলেও পরপর দশবার মেধাতালিকা দিয়েও শিক্ষার্থী পাচ্ছে না এই বিশ্ববিদ্যালয়। দুই হাজার ৭৬৫ আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য ১৭ হাজার ৫০০ জনকে ডাকা হয়েছে । তবে এখনো সবগুলো আসন পূরণ হয়নি।

শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য গণবিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে তাতেও তেমন সাড়া না মেলায় পরবর্তীতে আরও একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি ৮ মার্চ থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্লাস শুরুর আগেই ফাঁকা আসন পূরণে মঙ্গলবার (১ মার্চ) আবারও গণ সাক্ষাৎকার আহবান করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, জবির বিজ্ঞান (এ) ইউনিটে ৭৬৫২ থেকে ১২০০০ মেধাক্রম পর্যন্ত এবং মানবিক (বি) ইউনিটে ২৫১৭ থেকে ৩৫০০ মেধাক্রম পর্যন্ত সাক্ষাৎকার আহবান করে কর্তৃপক্ষ। সেই প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ১০ম মেধা তালিকায় প্রকাশকৃত শিক্ষার্থীরা সাক্ষাৎকার দিতে আসেন।

এদিকে, শিক্ষার্থী না পাওয়ার পেছনে করোনার প্রকোপে দীর্ঘসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা এবং গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার নানান অব্যাবস্থাপনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গুচ্ছ ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশিত হবার পর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ফলাফলপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের আবেদন শুরু হয় গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে। আবেদন চলে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত।

এরপর গত ৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাকক্ষে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সপ্তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিজ্ঞান (এ) ইউনিটে ২৩ হাজার ৯৫৫ জন, মানবিক (বি) ইউনিটে ৯ হাজার ৯৪০ জন এবং বাণিজ্য (সি) ইউনিটে ৭ হাজার ৭৬২ জন ভর্তিচ্ছু আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়।

পরদিন ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের নির্ধারিত আসনে ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ায় পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মোট ৭টি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। এতেও নির্ধারিত আসনের বিপরীতে শিক্ষার্থীদের তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ফাঁকা আসন পূরণে ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি গণ সাক্ষাৎকার আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।প্রথম থেকে সপ্তম মেধাক্রমে বিষয় বরাদ্দ পেয়েও যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হননি তাদেরও সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

মেধাতালিকা ও সাক্ষাৎকার আহবান করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁকা আসন পূরণ না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন অংশে চলছে নানান আলোচনা- সমালোচনা।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, এবার প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী না পাওয়ার প্রধান কারণ হল করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করোনাকালীন বন্ধের সময়েও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে৷ ফলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের সময় বাঁচানোর জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়েছে৷ এতে করে এখন শিক্ষার্থীদের কিছুটা সংকট তৈরী হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের এই সংকটের পেছনে গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার কোন কারণ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থ লাঘব হয়েছে।অন্যান্য বছর শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ ছিলনা। তাই শিক্ষার্থী সংকটের পেছনে গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার কোন ভূমিকা নেই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া বলেন,এবারের যে শিক্ষার্থী সংকট তা খুব অনাকাঙ্ক্ষিত। গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আয়োজন করা হলেও এতে কিছু অব্যবস্থাপনা ছিল। এই ব্যবস্থাটিকে আরও ভালো করা যেত। এর ফলাফলটি শিক্ষার্থীদের ওপরেই যাচ্ছে এখন।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১৭ অক্টোবরে গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান (এ) ইউনিটের, ২৪ অক্টোবর মানবিক (বি) ইউনিটের এবং পহেলা নভেম্বর বাণিজ্য (সি) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে ২০ অক্টোবর বিজ্ঞান (এ) ইউনিটের ফলাফল, ২৬ অক্টোবর মানবিক (বি) ইউনিটের ফলাফল এবং ৩ নভেম্বর বাণিজ্য (সি) ইউনিটের ফলাফল প্রকাশিত হয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২৭৬৫ আসনের বিপরীতে ডাকা হয়েছে ১৮ হাজার, তবুও আসন ফাঁকা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২৭৬৫ আসনের বিপরীতে ডাকা হয়েছে ১৮ হাজার, তবুও আসন ফাঁকা

শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, থাকা এবং অর্থ ব্যয়সহ নানান দুর্ভোগ লাঘবের জন্য এ বছর প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দেশের ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই পরীক্ষায় নেতৃত্ব দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার উপরের দিকে থাকলেও পরপর দশবার মেধাতালিকা দিয়েও শিক্ষার্থী পাচ্ছে না এই বিশ্ববিদ্যালয়। দুই হাজার ৭৬৫ আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য ১৭ হাজার ৫০০ জনকে ডাকা হয়েছে । তবে এখনো সবগুলো আসন পূরণ হয়নি।

শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য গণবিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে তাতেও তেমন সাড়া না মেলায় পরবর্তীতে আরও একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি ৮ মার্চ থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্লাস শুরুর আগেই ফাঁকা আসন পূরণে মঙ্গলবার (১ মার্চ) আবারও গণ সাক্ষাৎকার আহবান করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, জবির বিজ্ঞান (এ) ইউনিটে ৭৬৫২ থেকে ১২০০০ মেধাক্রম পর্যন্ত এবং মানবিক (বি) ইউনিটে ২৫১৭ থেকে ৩৫০০ মেধাক্রম পর্যন্ত সাক্ষাৎকার আহবান করে কর্তৃপক্ষ। সেই প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ১০ম মেধা তালিকায় প্রকাশকৃত শিক্ষার্থীরা সাক্ষাৎকার দিতে আসেন।

এদিকে, শিক্ষার্থী না পাওয়ার পেছনে করোনার প্রকোপে দীর্ঘসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা এবং গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার নানান অব্যাবস্থাপনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গুচ্ছ ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশিত হবার পর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ফলাফলপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের আবেদন শুরু হয় গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে। আবেদন চলে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত।

এরপর গত ৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাকক্ষে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সপ্তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিজ্ঞান (এ) ইউনিটে ২৩ হাজার ৯৫৫ জন, মানবিক (বি) ইউনিটে ৯ হাজার ৯৪০ জন এবং বাণিজ্য (সি) ইউনিটে ৭ হাজার ৭৬২ জন ভর্তিচ্ছু আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়।

পরদিন ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের নির্ধারিত আসনে ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ায় পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মোট ৭টি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। এতেও নির্ধারিত আসনের বিপরীতে শিক্ষার্থীদের তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ফাঁকা আসন পূরণে ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি গণ সাক্ষাৎকার আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।প্রথম থেকে সপ্তম মেধাক্রমে বিষয় বরাদ্দ পেয়েও যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হননি তাদেরও সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

মেধাতালিকা ও সাক্ষাৎকার আহবান করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁকা আসন পূরণ না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন অংশে চলছে নানান আলোচনা- সমালোচনা।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, এবার প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী না পাওয়ার প্রধান কারণ হল করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করোনাকালীন বন্ধের সময়েও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে৷ ফলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের সময় বাঁচানোর জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়েছে৷ এতে করে এখন শিক্ষার্থীদের কিছুটা সংকট তৈরী হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের এই সংকটের পেছনে গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার কোন কারণ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থ লাঘব হয়েছে।অন্যান্য বছর শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ ছিলনা। তাই শিক্ষার্থী সংকটের পেছনে গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার কোন ভূমিকা নেই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া বলেন,এবারের যে শিক্ষার্থী সংকট তা খুব অনাকাঙ্ক্ষিত। গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আয়োজন করা হলেও এতে কিছু অব্যবস্থাপনা ছিল। এই ব্যবস্থাটিকে আরও ভালো করা যেত। এর ফলাফলটি শিক্ষার্থীদের ওপরেই যাচ্ছে এখন।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১৭ অক্টোবরে গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান (এ) ইউনিটের, ২৪ অক্টোবর মানবিক (বি) ইউনিটের এবং পহেলা নভেম্বর বাণিজ্য (সি) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে ২০ অক্টোবর বিজ্ঞান (এ) ইউনিটের ফলাফল, ২৬ অক্টোবর মানবিক (বি) ইউনিটের ফলাফল এবং ৩ নভেম্বর বাণিজ্য (সি) ইউনিটের ফলাফল প্রকাশিত হয়।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন